নারী কৃষকদের উৎপাদিত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক মুক্ত কৃষিপণ্য ও সবজি প্রদর্শনী আজ নগরীর শহীদ হাদিস পার্কে অনুষ্ঠিত হয়। ব্যতিক্রমধর্মী এই আয়োজনে নারী কৃষকরা তাদের উৎপাদিত প্রায় শতাধীক কৃষিপণ্য ও সবজি নিয়ে হাজির হন।
খাদ্য নিরাপত্তায় নারী কৃষকদের অধিকার সংরক্ষণে জাতীয় প্রচারাভিযানের অংশ হিশেবে নারী কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বিক্রয় শেড নির্মাণ, নারী বান্ধব বাজার গড়ে তোলাসহ সরকারি খাস জমিতে নারী কৃষকদের অধিকারের দাবীতে দিনব্যাপী প্রদর্শনীর উদ্বোধন ঘোষণা করেন খুলনা জেলা পরিষদের প্রশাসক শেখ হারুনুর রশিদ।
নিরাপদ ও বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনের জন্য নারী কৃষকদের অভিনন্দিত করে অতিথিরা বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সাংবিধানিক কাঠামোয় নারীর সমঅধিকার স্বীকৃত। জাতীয় অগ্রযাত্রায় তথা অর্থনীতির মূল স্রতধারায় নারীর অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এতকিছুর পরও বাংলাদেশের নারীরা নীতি, আইন ও সহায়তার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় বৈষম্যের শিকার। লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য ও বঞ্চনার প্রেক্ষাপটে কৃষিখাতে নারীর সমমর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কৃষিতে নারীর অবদানকে ‘অবৈতনিক পারিবারিক শ্রম’ হিসাবে গণনা করা হয়। শুধু তাই নয়, নারী শ্রমকে তুচ্ছ বলে গণ্য করা হয় এবং নারীরা কৃষি উৎপাদনে জড়িত নয় এমনটা ধরেই নেওয়া হয়। অথচ নারীরা খাদ্য নিরাপত্তায় প্রধান ভূমিকা রাখছে। তারা উৎপাদন করছে নিরাপদ খাদ্য।
নারী শ্রমে সমমজুরী প্রদানের দাবী জানিয়ে সভায় বক্তারা কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে নারীর ভূমিকাকে প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি প্রদান, নারী কৃষকের অধিকার রক্ষা ও প্রচারের ক্ষেত্রে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য নীতি নির্ধারনী পর্যায়ে সচেতনতা গড়ে তোলা, নারী কৃষককে রাষ্ট্রীয় ভর্তুকির আওতায় আনা এবং পারিবারিক কৃষিকার্ড প্রবর্তন করা, শ্রম বাজারে নারী কৃষকের উন্মুক্ত প্রবেশাধিকারসহ বাজার মূল্য নিশ্চিত এবং আয়-ব্যয়ের বৈষম্য রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা, জাতীয় কৃষি নীতি ২০১৩ অনুযায়ী নারীর ক্ষমতায়ন, উৎপাদন ও বিপননের ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ এবং আয়ের সুযোগ নিশ্চিত করা, সম্পত্তিতে নারীর অধিকার বিষয়ক আইনকে যুগোপযোগী করাসহ সরকারি খাস জমিতে নারী কৃষকের অগ্রাধিকার ও নারী কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বিক্রয় শেড নির্মাণের দাবী জানান।
অক্সফ্যাম’র সহযোগিতায় এবং লোকজ ও উপজেলা নারী কৃষক ফোরামের যৌথ অয়োজনে অনুষ্ঠিত প্রদর্শনীতে বিশেষ অতিথি হিশেবে বক্তৃতা করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খুলনার উপপরিচালক কৃষিবিদ মো: আব্দুল লতিফ, মৎস্য অধিদপ্তর খুলনার উপপরিচালক প্রফুল্ল কুমার সরকার, খুলনা জেলা মহিলা বিষয়ক অফিসার নার্গিস ফাতেমা জামিন। লোকজ’র নির্বাহী পরিচালক দেবপ্রসাদ সরকারের সঞ্চালনায় প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নারী কৃষক ফোরামের সভাপতি আশালতা ঢালী।
by
সর্বশেষ মন্তব্যসমূহ