তুন প্রজন্মকে ভালো মানুষ হওয়ার প্রতিযোগীতায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে
বর্তমানে বাবা-মা’রা তাদের সন্তানদের নিয়ে একধরনের অসুস্থ প্রতিযোগীতায় লিপ্ত রয়েছেন। জিপিএ-৫ পেতে হবে, ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হবে। ভালো চাকরীর জন্য প্রতিযোগিতা করতে হবে, এ ধরনের প্রতিযোগীতায় লিপ্ত থাকলেও একজন ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে উঠার প্রতিযোগীতা নতুন প্রজন্মের মাঝে দেখা যাচ্ছে না।
খুলনার জেলা প্রশাসক মোঃ আমিন উল আহসান ২০ নভেম্বর রাতে শেরে বাংলা রোডস্থ বীরশ্রেষ্ঠ মোঃ রুহুল আমিন পাবলিক লাইব্রেরি পরিদর্শন ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ ডিবেটিং সোসাইটি, খুলনা যৌথভাবে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
প্রধান অতিথি তার বক্তৃতায় বলেন, ‘আমরা ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার স্বপ্ন দেখছি। কিন্তু নতুন প্রজন্ম যদি আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি সম্পর্কে না জানে তাহলে তারা আগামী দিনে নেতৃত্ব দিতে পারবে না। সমাজের দায়িত্ব নিতে পারবে না। সেই প্রেক্ষাপটে বীরশ্রেষ্ঠ মোঃ রুহুল আমিন পাবলিক লাইব্রেরি চমৎকার আইডিয়া নিয়ে কাজ করছে। কিশোর কিশোরীদের সৃজনশীলতা বিকাশে অত্যন্ত যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। আমাদের স্কুল-কলেজগুলোতে বর্তমানে সৃজনশীল কর্মকান্ড সীমিত হয়ে পড়েছে উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক বলেন, আমাদের অনেক ভালো ভালো প্রতিষ্ঠান রয়েছে, কিন্তু সেখানে একধরনের শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে কমিটমেন্টের অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের গুণগতমানের পরিবর্তন আজ অপরিহার্য। এ বিষয় শিক্ষক, অভিভাবক, সুধী সমাজ সবাইকে সচেতন ভূমিকা পালন করতে হবে।’
জেলা প্রশাসক খুলনা ডিবেটিং সোসাইটির খুদে বিতার্কিকদের নান্দনিক উপস্থাপনায় মুগ্ধ হন এবং তাদের দাবীর প্রেক্ষিতে শীঘ্রই ‘ডিবেটিং টুর্নামেন্ট’ আয়োজনের আশ্বাস প্রদান করেন।
মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় খুলনা বিভাগের উপভূমি সংস্কার কমিশনার এস.এম. রইজ উদ্দিন আহম্মদ বলেন, জ্ঞান ভিত্তিক সমাজ নির্মাণের জন্য বই পড়ার কোন বিকল্প নেই। বই মানুষের অন্তরকে জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত করে এবং নেতৃত্ব বিকাশে সহায়তা করে। কিন্তু বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে বইপড়ার অভ্যাস নেই। তারা ফেসবুক ইন্টারনেট নিয়ে ব্যস্ত থাকে যা থেকে তারা আসলে তেমন কিছুই শিখতে পারছে না। সেক্ষেত্রে প্রতিমাসে প্রতি ঘরে একখানা মুক্তিযুদ্ধের বই পৌঁছে দিতে এবং বই পড়া আন্দোলন গড়ে তুলতে বীরশ্রেষ্ঠ মোঃ রুহুল আমিন পাবলিক লাইব্রেরির ভূমিকা প্রশংসনীয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তৃতা করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মোঃ হাবিবুল হক খান, বাংলাদেশ ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি মেজর (অবঃ) ইঞ্জিনিয়ার বি.এম আসাদুজ্জামান পিঞ্জ, এডিসি (আইসিটি) মোঃ গিয়াস উদ্দিন এবং কালেক্টরেট স্কুল এ্যান্ড কালেজের প্রিন্সিপ্যাল প্রফেসর মোঃ আবুল বাশার মোল্লা।
বীরশ্রেষ্ঠ মোঃ রুহুল আমিন পাবলিক লাইব্রেরির সাধারণ সম্পাদক এ.এইচ.এম জামাল উদ্দীন’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযুদ্বের বইপড়া আন্দোলন, খুলনার চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মোঃ আলমগীর কবির। অনুষ্ঠানে লাইব্রেরির কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যবৃন্দ, ডিবেটিং সোসাইটির সদস্যবৃন্দ এবং বিশিষ্ট গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
by
সর্বশেষ মন্তব্যসমূহ