নবজাতক স্বাস্থ্য কর্মসূচির উদ্বোধন

নবজাতকের মৃত্যুহার কমানোর মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের লক্ষ্যে জাতীয় নবজাতক স্বাস্থ্য কর্মসূচির (এনএনএইচপি) উদ্বোধন ও আলোচনা সভা আজ (বুধবার) সকালে খুলনা জেনারেল হাসপাতালে অনুষ্ঠিত হয়।

খুলনা সিভিল সার্জন অফিস ও জেনারেল হাসপাতাল যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।এতে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ডাঃ সুশান্ত কুমার রায়। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘প্রতিটি নবজাতকের বাঁচার অধিকার প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার’।

খুলনা সিভিল সার্জন ডাঃ এ এসএম আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে স্বাগত জানান জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোঃ মাহাবুবুর রহমান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ মোঃ সরাফত হোসেন। এসময় ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ আতিয়ার রহমান শেখ, চিকিৎসক ও নার্সগণ উপস্থিত ছিলেন। সভা পরিচালনা করেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অফিসার মোঃ আবুল কালাম আজাদ।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, শিশুমৃত্যুর অন্যতমকারণ হলো কম জন্মওজন, সংক্রমণ ও প্রসবকালীন সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাব। কম জন্মওজনের শিশুকে মায়ের শরীরের সংস্পর্শে রেখে সঠিক উষ্ণতা প্রদানের জন্য ক্যাঙ্গারুকেয়ার পদ্ধতির অনুসরণ শিশুমৃত্যুহার কমাতে অবদান রাখতে পারে। জন্মের এক মিনিটের মধ্যে শিশুর কেঁদে ওঠা নিশ্চিত করা ও শিশুকে সংক্রমণমুক্ত পরিবেশে রাখা একান্ত প্রয়োজন। শিশুর জন্য সঠিক নিওনেটাল কেয়ার নিশ্চিত করা গেলে শূণ্য থেকে ২৮দিন বয়সের শিশুর মৃত্যুহার উল্লেখ্যযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে।

সকল প্রকার কৃত্রিম শিশু খাদ্য পরিহার করে জন্মের এক ঘন্টার মধ্যে শিশুকে মায়ের বুকের দুধ পান করানো শুরু করতে হবে। স্বাস্থ্যসেবা খাতের দক্ষতা বৃদ্ধি, ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা, যথাযথ সমন্বয় ও সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সরকার শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস ও এসডিজি লক্ষ্য বাস্তবায়নে দৃঢ় পরিকর। ২০১৭ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী খুলনা জেলার শূণ্য থেকে ২৮দিন বয়সী শিশু মৃত্যু সংখ্যা প্রতি হাজারে ১৪ জন। এক্ষেত্রে এসডিজি’র লক্ষ্যমাত্রা ১২ বা তার নিচে। যা ২০২৫ সালের মধ্যে অর্জিত হতে পারে বলে সিভিল সার্জন মত প্রকাশ করেন। ২০২৫ সালের মধ্যে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর ক্ষেত্রে মৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ২৫ জনের কমে নামিয়ে আনতে সার্বিক প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়ের জন্য গর্ভকালীন চেকআপ, পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করা, রক্ত স্বল্পতা দূর করা ও প্রয়োজনীয় আয়রন-ফলিক এসিড গ্রহণ নিশ্চিত করতে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক প্রচারনা চলমান রয়েছে। ফলে এসডিজি বাস্তবায়নে অগ্রগতি ক্রমাগত দৃশ্যমান হচ্ছে।

এর আগে পরিচালক স্বাস্থ্যর নেতৃত্বে খুলনা সিভিল সার্জন চত্ত্বর হতে র‌্যালি শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেনারেল হাসপাতাল চত্বরে এসে শেষ হয়। র‌্যালিতে ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, এনজিও প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmailby feather
ট্যাগসমূহঃ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Current ye@r *