কোন ধর্মেই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের স্থান নেই

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব এডভোকেট শেখ মোঃ আব্দুল্লাহ বলেছেন, কোন ধর্মই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে সমর্থন করে না। প্রত্যেক ধর্মের মূল শিক্ষা হচ্ছে শান্তি এবং পারস্পরিক সম্প্রীতি।

তিনি বৃহস্পতিবার সকালে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম জোরদারকরণের লক্ষ্যে ‘খুলনা বিভাগীয় আন্তঃধর্মীয় সংলাপে’ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।জেলা প্রশাসন সম্মেলনকক্ষে খুলনা বিভাগীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এই সংলাপের আয়োজন করে। সংলাপে খুলনা বিভাগের ১০ জেলার উর্দ্ধতন সরকারি কর্মচারী, মসজিদ মন্দির গির্জা প্যাগোডার ইমাম, পুরোহিত, যাজকসহ অন্যান্য ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশাজীবীরা অংশগ্রহণ করেন।

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের সমাজে একশ্রেণির লোক আছে, যারা ধর্মকে নিয়ে ব্যবসা করতে চায়। ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে চায়। তারা বিদ্বেষ ছড়িয়ে তরুণ সমাজকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করে। এক্ষেত্রে ধর্মীয় নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের সুযোগ  আছে। তারা যদি তাদের আলোচনায় ধর্মের সঠিক ব্যাখ্যা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারে তাহলে আর কেউ সন্ত্রাস, নাশকতা, মাদক ও জঙ্গিবাদের মতো অসমাজিক কাজকর্মে লিপ্ত হবে না।

প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেক জায়গায় সঠিক ব্যক্তিকে দায়িত্ব দিয়েছেন উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রত্যেকেই যদি যার যার দায়িত্বটুকু সঠিকভাবে পালন করি তাহলে জনগণের আর কোন ভোগান্তি হবে না। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কেউ কোন দুর্নীতির সাথে জড়িত থাকতে পারবে না উল্লেখ করে তিনি  বলেন, আগামী হজের সময় কোন দুষ্টচক্র হজ যাত্রীদের চোখ দিয়ে পানি ঝরালে তাদের চোখ দিয়ে রক্ত ঝরবে। তিনি এবছর থেকে হজে গমনেচ্ছুদের খরচ ২২ হাজার টাকা কমানোর ঘোষণা দেন।

তাবলীগের মধ্যকার দ্বন্দের বিষয়ে উল্লেখ করে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই তাবলীগের দুপক্ষের নেতাদের সাথে ফলপ্রসু আলোচনা করে উভয় পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছানো গেছে। আগামী ১৫ হতে ১৮ ফেব্রুয়ারি চার দিনব্যাপী ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। যেকোন আন্তঃধর্মীয় এবং অন্তঃধর্মীয় ভুলবোঝাবুঝি আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান করা যায়।

বিশেষ অতিথি খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, এদেশ আমাদের সকলের। এদেশে যদি সন্ত্রাস হয়, মাদক ছড়িয়ে পড়ে, জঙ্গিবাদের উত্থান হয় তাহলে আমরা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবো। তিনি আগামী দুই মাসের মধ্যে খুলনাকে মাদকমুক্ত ঘোষণা করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। একই সাথে তিনি অবৈধ দখল উচ্ছেদ এবং যেকোন ধরনের সন্ত্রাসী ও নাশকতামূলক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন।

খুলনার বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সংলাপে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন ধর্ম সচিব মোঃ আনিছুর রহমান, অতিরিক্ত ডিআইজি মোঃ হাবিবুর রহমান ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এসএম ফজলুল রহমান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোঃ আব্দুল হামিদ জমাদ্দার। ধন্যবাদ জানান খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন।

মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন নড়াইলের জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা, সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেরিনা আক্তার, ইফাবা পরিচালক শাহীন বিন জামান, পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত কুমার কুন্ডু, খ্রিষ্টান সোসাইটির সভাপতি নরভাট গোমেজ, ইমাম পরিষদের সভাপতি মুফতি মাওলানা মোঃ রফিকুল ইসলাম, হাজী কল্যাণ ফাউন্ডেশনের সহসভাপতি ফেরদৌস হাসান ফরাজি, মুক্তিযোদ্ধা আলমগীর কবির এবং খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এসএম হাবিব।

facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmailby feather
ট্যাগসমূহঃ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Current ye@r *