পিছিয়ে পড়াদের উন্নয়নের হাতিয়ার হতে পারে সামাজিক দায়বদ্ধতা

সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) থেকে খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (কেপিসিএল)’র গৃহীত সামাজিক উন্নয়ন কার্যক্রমের অগ্রগতি সম্পর্কিত মতবিনিময় সভা আজ (শনিবার) সকালে নগরীর কারিতাস মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।

উল্লেখ্য, কেপিসিএল কর্তৃক পরিচালিত সিএসআর প্রকল্পটি ২০১৩ সাল থেকে বাস্তবায়ন করে আসছে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা পরিবর্তন, খুলনা। অনুষ্ঠানের শুরুতে পরিবর্তন’র প্রকল্প ব্যবস্থাপক শিরিন পারভীন প্রকল্পের কর্মকান্ড সংক্ষেপে উল্লেখ করে বলেন, তাদের কর্মকান্ডের মধ্যে আছে শিক্ষা সহায়তা, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম, প্রবিণ বান্ধব সেবা সমূহ।

তিনি বলেন, নগরীর ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাশিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং মোহাম্মদিয়া ফেরদৌছিয়া হাফেজিয়া নূরানীয়া মাদাসা নিয়ে মূলত তারা কাজ করেন। চরম দারিদ্র পিড়িত পিছিয়ে পড়া এলাকার কাশিপুর স্কুলটি নিয়ে তারা কাজ শুরু করেন। আট শতাধিক শিক্ষার্থিকে তারা শিক্ষা বিষয়ে নানা ভাবে সহয়তা দিতে থাকেন। তাদের পড়াশুনার পাশাপাশি চিত্রাংকন, অভিনয়, খেলাধুলা ইত্যাদি বিষয়ে দায়িত্ব নিয়ে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আর এ সকল কর্মের ফল স্বরূপ একদম পিছিয়ে পড়া অবস্থা থেকে ২০১৮ সালে জেলা পর্যায়ে স্কুলটি প্রথম স্থান অধিকার করে।

এ সময় শিক্ষা বিষয়ে সহয়তার পাশাপাশি উপকরণ হিসাবে শিক্ষার্থিদের মধ্যে আট সহস্রাধিক স্কুল ড্রেস, লক্ষাধিক খাতা-কলম প্রদান এবং ৬৪৯ জন শিক্ষার্থিকে আর্থিক সহয়তা প্রদান করা হয়।

তিনি আরও বলেন, প্রায় সাত শতাধিক ছেলেমেয়েকে সব ধরিনের কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় যাদের মধ্যে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থি প্রশিক্ষক সহ বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ করে স্বনির্ভর জীবন জাপন করছে। এ ছাড়া মহিলাদের শেলাই প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বপ্নিল নামে একটি সমবায় সমিতি গড়ে দেওয়া হয়েছে যা এ অঞ্চলে আজ একটি ব্রান্ড।

এ ছাড়াও এ অঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষকে অপারেশন সহ বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান এবং প্রবিণ উপেক্ষিত নারি-পুরুষদের বিভিন্ন উৎসবে খাদ্য-বস্ত্রসহ বিভিন্ন ধরনের শারীরীক-মানষিক সহয়তা প্রদান করা হয়। সভায় উপকারভোগীরাও  তাদের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা ও মতামত তুলে ধরেন।

আজকের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। সিটি মেয়র বলেন, কেপিসিএল’র মতো অন্য ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো জনকল্যাণমূলক কাজে এগিয়ে আসলে সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষেরা উপকৃত হবে। তিনি বলেন, সরকার বিদ্যুতের উন্নয়নে নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে। ১৬ শত মেগাওয়াট থেকে আজ ২৬ হাজার মেগাওয়াটে উন্নতি হয়েছে। এর পাশাপাশি বিদ্যুৎ’র চাহিদাও বাড়ছে ব্যাপক হারে, পদ্মাব্রীজ সম্পন্ন হলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম যা আরো বৃদ্ধি পাবে। এ মতা বস্থায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের কোনো বিকল্প নেই, যা আগামী দিনে আরও বৃদ্ধি করতে হবে এবং বর্তমান সরকার সে চেষ্টা অব্যহত রেখেছে এবং রাখবে। মেয়র কেপিসিএল’র এধরণের উদ্যোগকে স্বাগত জানান।

অনুষ্ঠানে জুমে যুক্ত ছিলেন খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (কেপিসিএল)’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক আল মামুন এম আতিকুল ইসলাম। সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএমএর সভাপতি ডাঃ শেখ বাহারুল আলম, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. দিলীপ কুমার দত্ত, সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক মোঃ আব্দুর রহমান, খুলনা আঞ্চলিক তথ্য অফিসের উপ-প্রধান তথ্য অফিসার ম. জাভেদ ইকবাল, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক আফরোজা খান মিতা, কেপিসিএল’র জেনারেল ম্যানেজার মোঃ রেজাউল আহসান। এতে সভাপতিত্ব করেন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পরিবর্তনের সভাপতি অজান্তা দাস। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সুন্দরবন একাডেমির পরিচালক প্রফেসর আনোয়ারুল কাদির। স্বাগত জানান পরিবর্তনের নির্বাহী পরিচালক এম নাজমুল আজম ডেভিড।

সভায় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মচারী-কর্মকর্তা, উপকারভোগী, এনজিও প্রতিনিধি ও গণমাধ্যমকর্মীরা অংশ নেন। খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (কেপিসিএল)’র সহযোগিতায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পরিবর্তন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmailby feather
ট্যাগসমূহঃ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Current ye@r *