সারাদেশে ঘরে-বাইরে হাজার হাজার শিশু শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার !

বাংলাদেশের গ্রাম ও শহর এলাকায় শিশুদের ঝুঁকির পরিসর নিরুপনে এক গবেষণা পরিচালনা করে ইনসিডিন বাংলাদেশ। গবেষণা পত্রটি তৈরী করা হয়েছে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’র জন্য। গবেষণায় শিশু নির্যাতনের যে চিত্র উঠে এসেছে তা ভয়াবহ। ঢাকা, খুলনা, বরিশালসহ দেশের ১১টি জেলার ৫ হাজার ৭৪ জন শিশুকে নিয়ে এ গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

গবেষণায় দেখা যায় যে, ছেলে শিশুদের চেয়ে কন্যাশিশুরা অধিক নির্যাতনের শিকার হয়। নিজ পরিবারেই শিশুরা সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হয়। শিশুদের বক্তব্যানুযায়ী ৯৫.৩ শাতাংশ ছেলেশিশু এবং ৯৬.২ শতাংশ কন্যাশিশু শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে খোদ নিজ পরিবারেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই নির্যাতনের হার, মানসিক নির্যাতন ৮৬.১ শতাংশ এবং শারীরিক নির্যাতন ৮২ শতাংশ এবং এর পাশাপাশি যৌন নির্যাতন ২৪.১ শতাংশ। সামাজিক পরিসরে মানসিক নির্যাতনে শিকার ৮৪.৬ শতাংশ, শারীরিক নির্যাতন ৬৭.১ শতাংশ এবং যৌন নির্যাতনের শিকার ৩৬ শতাংশ শিশু। তবে কন্যাশিশুরা বলেছে সামাজিক পরিসরে  ৫৯ শতাংশ শিশু ইভ টিজিং’র শিকার। অন্যদিকে কর্মজীবী শিশুদের বক্তব্য, কর্মক্ষেত্রে তারা মানসিক নির্যাতনের শিকার ৭২ শতাংশ, শারীরিক নির্যাতনের শিকার ৫৫.৩ শতাংশ এবং ৩৭.৮ শতাংশ শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার।

বাংলাদেশের গ্রাম ও শহর এলাকায় শিশুদের ঝুঁকির পরিসর নিরুপন শীর্ষক এক সভা অনুষ্ঠিত হয় গতকাল খুলনা প্রেসক্লাব বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পরিবর্তন-খুলনা এবং সিপিডি’র উদ্যোগে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অপরাধ), খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ, খুলনা, এস এম ফজলুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-পরিচালক, জেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তর, খুলনা, খান মোতাহার হোসেন এবং জেলা শিশু বিষয়ক অফিসার, খুলনা, আবুর আলম।  সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক অজন্তা দাস, সভাপতি, পরিবর্তন-খুলনা।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন পরিবর্তন-খুলনার নির্বাহী পরিচালক এম. নাজমুল আজম ডেভিড এবং শিশুদের ঝুঁকির পরিসর নিরুপন বিষয়ক গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন রাফেজা শাহীন, প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেটর, মানুষেরজন্য ফাউন্ডেশন।

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য রাখেন ডিআইজি, শ্রম অধিদপ্তর, খুলনা, মোঃ মাহাবুবুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত থানা শিক্ষা অফিসার রিনা পারভিন, জেজেএস-র প্রোগ্রাম ডিরেক্টর এম এম চিশতী, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র ও সংরক্ষিত-৩ আসনের কাউন্সিলর মেমরীসুফিয়া রহমান শুনু, এ্যাডঃ কুদরত-ই-খুদা, দাউদ জীবন দাস,  ইসমত আরা হীরা, সুতপা বেদজ্ঞ, সম্মিলিত নারী ও শিশু সুরক্ষ াকমিটি,  যমুনা টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার প্রবীর কুমার বিশ্বাস প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, শিশু সুরক্ষা এবং অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন সামাজিক উদ্যোগের সাথে একাত্ম হয়ে নিরলস কর্মতৎপরতা অব্যাহত রাখতে হবে। পাশাপাশি শিশুদের জন্য মানসম্মত শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপত্তা, বিনোদন, খেলাধুলা, বাল্য বিবাহ রোধ শিশু সুরক্ষায় শিশুবান্ধব নীতি বাস্তবায়নসহ শিশুর বিকাশের জন্য সমন্বিত উদ্যোগের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

 

facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmailby feather
ট্যাগসমূহঃ ,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Current ye@r *