খুলনায় বিএনপির নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা

খুলনায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের ৯২ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো সাত-আটশ’ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে খুলনা সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বিশ্বজিৎ কুমার বোস বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।

এদিকে, খুলনা মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের  (কেএমপি) দপ্তর থেকে অনুমতি নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে সমাবেশ শুরু করলেও পুলিশের মদদপুষ্ট হয়ে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে তাদের সমাবেশ পন্ড করে দেয়। এমনকি ঘটনায় আহত হয়ে যারা বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিক ভর্তি হয় পুলিশ আটক করে।

এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন, মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট. এস এম শফিকুল আলম মনা, জেলা বিএনপির আহবায়ক আমির এজাজ খান,  রকিবুল ইসলাম বকুল, মহ্নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক তরিকুল ইসলাম জহির, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, মহানগর বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক সৈয়দা রেহেনা আক্তার, খ স ম আবদুর রহমান, কাজী মাহামুদ আলী, শেখ সাদী, চৌধুরী হাসানুর রশিদ মিরাজ, মহানগর যুবদলের সভাপতি মাহাবুব হাসান পিয়ারু, মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হুদা চৌধুরী সাগর, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ইবাদুল হক রুবায়েত,  মহানগর ছাত্রদলের আহবায়ক মো. ইসতিয়াক আহম্মেদ ইস্তি, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোত্তফা তুহিন, মহানগর ছাত্রদলের সদস্য সচিব মো. তাজিম বিশ্বাস, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুল মান্নান মিস্ত্রী, মো. মাসুদ পারভেজ বাবু, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা হেলাল আহম্মেদ সুমন, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি একরামুল হক হেলালসহ অন্যান্যরা।

পুলিশ জানায়, গত বৃহস্পতিবার নগরীর কে ডি ঘোষ রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হয়। অপরদিকে বিকাল ৪টায় নগরীর শহিদ হাদিস পার্কে ছাত্রলীগ প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে। সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ডাকবাংলো মোড় থেকে ঘুরে পুনরায় দলীয় কার্যালয়ে আসার সময় বিক্ষোভ মিছিলটি নগরীর পিকচার প্যালেস মোড় অতিক্রম করার সময় খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা ইট পাটকেলসহ খুলনা জেলা ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিলের উপর হামলা চালায়। সে সময় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা বিএনপির নেতাকর্মীদের নিভৃত করার চেষ্টা করে। কিন্তু বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। এসময় পিকচার প্যালেস মোড় থেকে বিএনপি অফিস পর্যন্ত ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ এবং রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এদিকে, আজ শুক্রবার সকালে নগরীর কেডি ঘোষ রোডের দলীয় কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে খুলনা মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনা অভিযোগ করে বলেন, “পুলিশের ছত্রছায়ায় ছাত্রলীগ-যুবলীগ আক্রমণ চালিয়ে আমাদের সমাবেশ পন্ড করে দেয়। পুালিশ টিয়ারশেল ও গুলি করে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে।

তিনি বলেন, কেএমপির দপ্তর থেকে অনুমতি নিয়ে সমাবেশ শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু সরকার শেষ মুহূর্তে এসে অসহিষ্ণু আচরণ করছে। সমাবেশের ৫০০ চেয়ার ভাঙচুর করা হয়েছে। পুলিশ, ছাত্রলীগ-যুবলীগের হামলায় বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। পুলিশ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিবসহ ৪১ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার  করেছে।” এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির আহবায়ক আমীর এজাজ খান, সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক তরিকুল ইসলাম জহির, কাজী রাশেদ, কাজী মাহমুদ আলী, আজিজুল হাসান দুল প্রমুখ।

খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) হাসান আল মামুন জানান, পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ৯২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো সাত-আটশ’ ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৪১জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুর ৩টায় গ্রেফতারকৃত আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়েছে।

 

facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmailby feather
ট্যাগসমূহঃ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Current ye@r *