খুলনায় স্কুলছাত্র রাজিন হত্যায় ১৭ আসামির ৭ বছরের কারাদন্ড

আলোচিত খুলনা পাবলিক কলেজের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ফাহমিদ তানভীর রাজিন হত্যার দায়ে ১৭ আসামিকে ৭ বছরের কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। আজ দুপুরে খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ ও শিশু আদালতের বিচারক মো. আব্দুস ছালাম খান এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে ৩০২/৩৪ ধারায় আসামিদের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। তবে যে সকল আসামির বয়স ১৮ বছরের নিচে তাদের সংশোধনাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ ও শিশু আদালতের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদ আহমেদ।

কারাদন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হচ্ছে, মঞ্জুরুল ইসলাম ওরফে সাব্বির হাওলাদার (১৬), বিএম মাজিব হাসান রয়েল (১২), শাহারিয়ার জামান তুর্য্য (১৭), রিয়ান শেখ ওরফে রেফাত (১২), ফাহিম ইসলাম মনি (১৪), সানি ইসলাম ওরফে আপন (১৩), জিসান খান (১৫), তারিন হাসান ওরফে রিজভী (১৩), শাকিব খান শিমুল (১৭), অন্তর কুসার দাস (১৫), মো. হাকিম (১৭), সৈকত (১৬), শেখ সাকিব (১৭), আসিফ প্রান্ত আলিফ (১৫), শেখ তামিম (১৬), সাকরান সালেহ ওরফে মিতুল (১২) এবং মোস্তফিজুর রহমান নাঈম (১৪)।

আদালত সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ২০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে কনসার্ট দেখার জন্য খুলনা পাবলিক কলেজের উদ্দেশ্যে রওনা হয় রাজিন। রাতে অনুষ্ঠান স্থলে বসাকে কেন্দ্র করে আসামি তামিমের সঙ্গে রাজিনের হাতাহাতি হয়। রাত ৯ টার দিকে তারা রাজিনকে অনুষ্ঠানের মঞ্চের পিছনে নিয়ে গিয়ে চড় থাপ্পড় মারতে থাকে। একপর্যায়ে সাব্বির বলে আমার কাছে চাকু আছে। অনেকদিন চাকুটি রক্ত খায় না। মামলার অন্যান্য আসামিরা রাজিনের হাত চেপে ধরে। আর সাব্বির চাকুটি রাজিনের পেটে ঢুকিয়ে দিলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এরপর আসামিরা পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় রাজিনকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এরপর নিহতের পিতা শেখ জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে ৬ জন আসামির নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ১০ জনের বিরুদ্ধে নগরীর খালিশপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। একই বছরের ১৬ ফেব্রæয়ারি খালিশপুর থানার এসআই মো. মিজানুর রহমান ১৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

রায় ঘোষণার পর নিহত রাজিনের মা খুলনা পুলিশ লাইন স্কুলের শিক্ষিকা রেহানা খাতুন অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, শিশু আইনে সর্বোচ্চ ১০ বছরের সাজার কথা বলা হলেও আদালত সেটা না করে আসামিদের ৭ বছরের কারাদন্ড দিয়েছে। এ ছাড়া আসামিরা রায় ঘোষণার পর কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সাজা শেষে কারাগার থেকে বেরিয়ে তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

এদিকে, রায় ঘোষণার পর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদ আহমেদ আসামিদের ৭ বছরের কারাদন্ড দেওয়ায় আদালতের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেন।

 

facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmailby feather
ট্যাগসমূহঃ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Current ye@r *