উপকূলের লবণাক্ততা মাটি ও কৃষি গবেষণায় খুবিকে ব্যাংক এশিয়ার সহায়তা নতুন দৃষ্টান্ত : উপাচার্য

বিকনের পর এবার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা সহায়তা এগিয়ে এলো ব্যাংক এশিয়া। তবে ব্যাংক এশিয়া অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো কৃষি গবেষণায় সহায়তা করে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সয়েল ওয়াটার এন্ড এনভায়রনমেন্ট ডিসিপ্লিনের উপকূলীয় লবণাক্ত এলাকায় মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি এবং ফসল উৎপাদন উপযোগী করার প্রযুক্তি উদ্ভাবনে গবেষণা পরিচালনায় এ সহায়তা দিয়েছে ব্যাংকটি। গবেষণা সহায়তার পরিমাণ এক কোটি ২৮ লাখ টাকা এবং এর মেয়াদ ৩ বছর। প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান হিসেবে কোনো ব্যাংক থেকে এ ধরনের কৃষি গবেষণায় সহায়তা প্রদান এটিই প্রথম।

আজ ৫ মার্চ রবিবার সকাল ১০টায় শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ ভবনের সম্মেলন কক্ষে এমওইউ স্বাক্ষর উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। তিনি বলেন, দেশের কোনো ব্যাংক কৃষিক্ষেত্রে এবং বিশেষত মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি নিয়ে গবেষণায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে এগিয়ে এসে অনন্য নজির স্থাপন করলো। এটি বাংলাদেশের প্রাইভেট সেক্টরের জন্য নতুন দৃষ্টান্ত। তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা জোরদারের জন্য তাগিদ দিয়েছেন। গবেষণার জন্য স্বতন্ত্র তহবিল গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে অধিকতর গবেষণামুখী করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’ ইতোমধ্যে গবেষণা সহায়তার জন্য স্বতন্ত্র ইনডোমেন্ট তহবিল গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন শিক্ষা ও গবেষণার চমৎকার পরিবেশ বিরাজ করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ নিরলস প্রচেষ্টার মাধ্যমে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রথম ওবিই কারিকুলা প্রণয়ন করেছেন। গত জানুয়ারি থেকে এই কারিকুলা অনুসরণ করে পাঠদান করা হচ্ছে। শিক্ষকদের পাশাপাশি প্রতি ডিসিপ্লিনে দুইজন পিএইচডি, এমফিল ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীকে গবেষণা সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। গবেষণার জন্য এবছর প্রায় ৪ কোটি টাকার সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

অনুষ্ঠানে ব্যাংক এশিয়ার প্রেসিডেন্ট ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আদিল চৌধুরী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার চমৎকার পরিবেশ বিরাজ এবং গবেষণাসহ নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করায় উপাচার্যকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, ‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্পণ করে আমরা উচ্ছ্বসিত।’ ব্যাংক এশিয়ার সাথে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি গবেষণার এই যাত্রা বহুবিস্তৃত এবং দীর্ঘায়িত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। একই সাথে তিনি বলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্যাংক এশিয়া তার নীতি-নির্ধারণীতে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে এবং দেশের কৃষি সেক্টরের উন্নয়নে পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করে নানামুখী কর্মসূচি নিয়েছে। ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ গঠনে সরকারের অভিলক্ষ্য পূরণে ব্যাংক সাড়া দিয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। ব্যাংক এশিয়াকে গবেষণা সহায়তার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এমওইউতে স্বাক্ষর করেন ট্রেজারার প্রফেসর অমিত রায় চৌধুরী এবং ব্যাংক এশিয়ার পক্ষে ক্রেডিট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ডিভিশনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস-প্রেসিডেন্ট তাহমিদুর রশিদ। পরে স্বাক্ষরিত এমওইউ’র কপি উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন এবং ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আদিল চৌধুরীর নিকট হস্তান্তর করা হয়।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর অমিত রায় চৌধুরী, সয়েল ওয়াটার এন্ড এনভায়রনমেন্ট ডিসিপ্লিনের প্রধান প্রফেসর ড. মো. সানাউল ইসলাম। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সয়েল ওয়াটার এন্ড এনভায়রনমেন্ট ডিসিপ্লিনের প্রফেসর আফরোজা বেগম, প্রফেসর মোহাম্মদ জাবের হোসেন, প্রফেসর ড. মো. হানিফ, সহযোগী অধ্যাপক মো. সাজিদুল ইসলাম, সহযোগী অধ্যাপক নিপা অধিকারীসহ শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক সোনিয়া নাসরিন এই সমঝোতা স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করায় তাঁকে ধন্যবাদ জানানো হয়।

এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন ব্যাংক এশিয়ার অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চিফ ক্রেডিট অফিসার শফিউজ্জামান, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এন এম মাহফুজ, এগ্রিকালচার ডিভিশনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস-প্রেসিডেন্ট মো. শামিনুর রহমান, ব্যাংক এশিয়া খুলনা শাখার প্রধান মো. আবু হেনা হাসানুজ্জামান এবং এক্সিকিউটিভ অফিসার মো. ফয়সাল ইসলাম।

facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmailby feather
ট্যাগসমূহঃ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Current ye@r *