খুলনা জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

খুলনা জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির জানুয়ারি মাসের সভা আজ রবিবার সকালে জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীনের সভাপতিত্বে জেলা প্রশাসন সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সিভিল সার্জন ডাঃ সুজাত আহমেদ জানান, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে টিকা প্রদান কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। আজ থেকে ৫-১১ বছর বয়সী শিশুদের করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রাপ্তবয়ষ্কদের জন্য চতুর্থ ডোজ প্রদানের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তিনি এ বিষয়ে ব্যাপক প্রচার প্রচারণার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ জানান। তিনি আরও বলেন, সারাদেশে ডেঙ্গুরোগের প্রাদুর্ভাব দৃশ্যমান হচ্ছে। খুলনায় সকল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু শনাক্তের ব্যবস্থা রয়েছে। খুলনায় ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নে চলমান কর্ম শেষ হলে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ আরো কমবে বলে আশা করা যায়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানভীর আহম্মদ জানান, খুলনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভাল রয়েছে। চলমান শীত মৌসুমে চুরির ঘটনা বৃদ্ধির আশংকা থাকে। এ সংশ্লিষ্ট অপরাধ প্রতিরোধে পুলিশ বাহিনী সজাগ রয়েছে। জেলায় চুরি হওয়া ৬৭টি মোবাইল ফোন সেট অভিযানের মাধ্যমে উদ্ধার করে মালিকদের কাছে ফেরৎ দেওয়া হয়েছে। বিগত ডিসেম্বর মাসে জেলায় দুইশত ৮০টি নিয়মিত মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রতিবেদন সময় মতো পেতে কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয় এজন্য অনলাইন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, কৃষকদের তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে স্থানভিত্তিক চাষাবাদে উৎসাহিত করা হচ্ছে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় জেলার সাত হাজার কৃষকে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। এর ফলে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়। এবছর জেলায় আমন মৌসুমে দুই লাখ ৭৫ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নিদের্শনা মোতাবেক এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি থাকবে না এই লক্ষ্যে সরকারের কৃষি দপ্তর কাজ করে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, খুলনার উপকূলীয় এলাকার বিভিন্ন পোল্ডরে বন্ধ স্লুইসগেট বা খাল সচল রাখলে কৃষিক্ষেত্রে পানি সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে কৃষকের ফসল উৎপাদন সহজ হবে।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ তাজুল ইসলাম সভায় জানান, খুলনায় জেলায় দুইটি সিএসডি এবং আটটি এলএসডি খাদ্য গুদামে সর্বমোট ৯৯ হাজার মেট্রিক টন চাল ও পাঁচ হাজার পাঁচশত ১৬ মেট্রিক টন গম মজুদ আছে। চাহিদার তুলনায় চাল ও গমের মজুদ সন্তোষজনক। ভিজিএফ খাতে ২০২২-২৩ অর্থবছরে দুই হাজার দুইশত ২২ মেট্রিক টন চাল এবং কাজের বিনিময় খাদ্য কর্মসূচির আওতায় ৮৫ হাজার আটশত ২৩ মেট্রিক টন চাল ও একশত ৭৬ মেট্রিক টন গম বিতরণ করা হয়েছে।

সভাপতির বক্তৃতায় জেলা প্রশাসক বলেন, উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান রাখার স্বার্থে সকল দপ্তরের মাঝে সমন্বয় থাকা প্রয়োজন। এসময় তিনি সুন্দরবনের বিভিন্ন নদীতে বিষ দিয়ে মাছ ধরা ও চিংড়িতে অপ্রদ্রব্য পুশ করার মতো অনৈতিক কর্মকান্ড বন্ধে মোবাইকোর্ট পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্টদের নিদের্শনা প্রদান করেন। তিনি বলেন, শব্দ দূষণের কারণে মানুষের মানসিক ও শারীরিক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। এ দূষণরোধে পরিবেশ অধিদপ্তরকে আরো সক্রিয়ার পরামর্শ দেন জেলা প্রশাসক।
সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) পুলক কুমার মন্ডল, বিভিন্ন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, সরকারি দপ্তরের অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmailby feather
ট্যাগসমূহঃ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Current ye@r *