খুলনায় বেদনাময় স্মৃতি নিয়ে যথাযথ মর্যাদায় শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে আজ বুধবার সকালে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে খুলনা জেলা প্রশাসন সম্মেলনকক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সিটি মেয়র বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এই দিনটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের নিশ্চিত পরাজয় জানতে পেরে জাতিকে মেধাশূন্য করার উদ্দেশ্যে স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার-আলবদর-আল শামস বাহিনীর সহযোগিতায় ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর সারাদেশে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায়। নির্মমভাবে হত্যা করে জাতির মেধাবী সন্তান বুদ্ধিজীবীদের। ২৫ মার্চ কালরাত থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের পুরোটা সময় জুড়েই বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়। জাতিকে মেধাশূন্য করার জন্য এই নির্মম হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছিলো। শহিদ বুদ্ধিজীবীরা বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ আজ জ্ঞান জগতে অনেক দূর এগিয়ে যেত, যা এখন খুবই প্রয়োজন। বেইমান রাজাকার আর তাদের সঙ্গিরা দেশের এই অপূরণীয় সর্বনাষ করেছে আর এখনও তারা এদেশের সর্বনাষের পায়তার চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম না হলে বাংলাদেশ সৃষ্টি হতো না। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশ ২১ বছর বাংলাদেশের শত্রু রাজাকার-আলবদর আর তাদের সঙ্গি দের করতলগত ছিলো, দেশের হেডকোয়ার্টার ছিল পাকিস্তান। দেশের জনগণ সেই ২১ বছর ছিল মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত পাকিস্তানিদের শাসনে। স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি এখন রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতার হত্যাকারীদের আইনের আওতায় এনে বিচার করেছেন, তেমনি স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার-আলবদর-আল শামসদের বিচার করা হয়েছে। সেদিনের সেই পরাজিত শক্তির দোসররা যেন এদেশে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সেজন্য নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, বুদ্ধিজীবী দিবসের ইতিহাস ও স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে মেয়র সকলের প্রতি আহবান জানান।
খুলনার জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আলমগীর কবির, সরদার মাহাবুবার রহমান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান, ও কেএমপি’র অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) সোনালী সেন। স্বাগত বক্তৃতা করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) পুলক কুমার মন্ডল।
এদিকে, শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়ন, খুলনা মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি-জেপিসহ বিভিন্ন সংগঠন পৃথক পৃথক আলোচনা সভার আয়োজন করে।
by
সর্বশেষ মন্তব্যসমূহ