খুলনায় আনন্দ উৎসবে মহান বিজয় দিবস উদযাপিত

খুলনায় আনন্দ উৎসবের আমেজে আজ ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস-২০২২ উদযাপিত হয়।

এ উপলক্ষে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে গল্লামারী শহিদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। প্রত্যুষে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনে ৩১বার তোপধ্বনির মধ্যদিয়ে দিবসের শুভ সূচনা করা হয়। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি ভবন ও প্রতিষ্ঠানসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ও সড়ক দ্বীপসমূহ জাতীয় পতাকা দ্বারা সজ্জিত করা হয়।

গল্লামারী শহিদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মহানগর ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, কেসিসি’র মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, বিভাগীয় কমিশনার মোঃ জিল্লুর রহমান চৌধুরী, পুলিশ কমিশনার মোঃ মাসুদুর রহমান ভূঞা, রেঞ্জ ডিআইজি মঈনুল হক, জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন, সরকারি-বেসরকারি দপ্তর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আওয়ামী লীগ এবং এর অংগ ও সহযোগি সংগঠন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

সকাল সাড়ে আটটায় খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মোঃ জিল্লুর রহমান চৌধুরী। পরে সেখানে বীর মুক্তিযোদ্ধা, পুলিশ, আনসার-ভিডিপি, বিএনসিসি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, স্কুল,কলেজ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান, শিশু-কিশোর সংগঠন, কারারক্ষী, বাংলাদেশ স্কাউট, রোভার স্কাউট, গার্লস গাইড এর অংশগ্রহণে কুচকাওয়াজ এবং শরীরচর্চা প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। বিভাগীয় কমিশনার প্রধান অতিথি হিসেবে কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ করেন। পুলিশ কমিশনার মোঃ মাসুদুর রহমান ভূঞা, খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি মঈনুল হক, খুলনার জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন এবং পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান এসময়  উপস্থিত ছিলেন।

নগরীর শহীদ হাদিস পার্কে খুলনা আঞ্চলিক তথ্য অফিস, পিআইডি’র আয়োজনে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের ওপর স্থিরচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। খুলনা সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে নগর ভবনে শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।

বেলা সাড়ে ১১টায় খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেয়া হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার মোঃ জিল্লুর রহমান চৌধুরী, রেঞ্জ ডিআইজি মঈনুল হক, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোঃ সাজিদ হোসেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হানুরুর রশীদ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান, সাবেক মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোঃ আলমগীর কবীর ও সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সরদার মাহাবুবার রহমান। এতে সভাপতিত্ব করেন খুলনার জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন। এ সময় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, বীর মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

হাসপাতাল, জেলখানা, এতিমখানা, শিশুসদনসমূহে দিবসটি উপলক্ষে বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হয়। দেশের শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করে বাদজোহর নগরীর মসজিদসমূহে বিশেষ মোনাজাত এবং মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত সিনেমা হলসমূহে বিনা টিকিটে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়। খুলনা বিভাগীয় জাদুঘর এবং ফুলতলার দক্ষিণডিহি রবীন্দ্র স্মৃতি জাদুঘর সকাল থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত শিশুসহ বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য বিনা টিকেটে উম্মুক্ত রাখা হয়। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গিলাতলা শিশুপার্ক ও বয়রা শিশু পার্ক  বিনাটিকিটে শিশুদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়।

দিবসটি উপলক্ষে খুলনা বেতার বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার এবং স্থানীয় সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে। এছাড়াও দিবসটি পালন উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পৃথক পৃথক কর্মসূচির আয়োজন করে।

facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmailby feather
ট্যাগসমূহঃ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Current ye@r *