বঙ্গবন্ধু কেন এখনো প্রাসঙ্গিক শীর্ষক বিশেষ ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত

আজ ২০ আগস্ট শুক্রবার বিকাল সাড়ে চার টায় জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গণহত্যা জাদুঘর ও বাংলাদেশ ইতহাস সম্মিলনীর যৌথ উদ্যোগে ‘বঙ্গবন্ধু কেন এখনো প্রাসঙ্গিক?’ শীর্ষক বিশেষ ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

জাতীয় শোক দিবসে গণহত্যা জাদুঘর আয়োজিত ধারাবাহিক কর্মসূচির একটা বিশেষ পর্ব আজকের ওয়েবিনারটি।

এই ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, এমপি। অনুষ্ঠানে আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন গণহত্যা জাদুঘরের উপদেষ্টা সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি ও ও গণহত্যা জাদুঘরের ট্রাস্টি শাহরিয়ার কবির এবং সর্ব ইউরোপীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি ও গণহত্যা জাদুঘরের উপদেষ্টা এম নজরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গণহত্যা জাদুঘরের ট্রাস্টি সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক মুনতসীর মামুন।

অনুষ্ঠান শুরু হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ পনের আগস্টে নিহত সবাই,  চার জাতীয় নেতা ও ত্রিশ লক্ষ শহিদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গুরুত্বকে তুলে ধরেন। তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বাস্তবায়নের উপর জোর দেন। তিনি বঙ্গবন্ধুকে একজন ক্যারিশম্যাটিক লিডার হিসাবে উপস্থাপন করে বলেন, মানুষের দুঃখ যেমন বঙ্গবন্ধুকে আচ্ছন্ন করেছে, তেমনি বঙ্গবন্ধু মানুষকে প্রভাবিত করেছেন। তাদের হয়ে কথা বলেছে। তিনি বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের ইতিহাস তুলে ধরেন, বিশেষ করে সাত মার্চের ভাষণের তাৎপর্যের কথা উল্লেখ করেন। প্রতিমন্ত্রী পঁচাত্তরের সেই অন্ধকার সময়ের কিছু ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ করেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পিছনে বিভিন্ন গোষ্ঠীর দায় সম্পর্কেও বলেন।

শাহরিয়ার কবির বলেন, পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে কেন হত্যা করা হয়েছিল সেটার দিকে ভালো করে নজর দিলেই বঙ্গবন্ধু কেন প্রাসঙ্গিক তার উত্তর পাওয়া যাবে। মুক্তিযুদ্ধের ধর্মনিরপেক্ষ চেতনাকে ধুলিস্যাৎ করার জন্য এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধের লক্ষ্যে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।

এম নজরুল ইসলাম একটি পরিবর্তিত বিশ্বব্যবস্থায় কীভাবে বঙ্গবন্ধুর চেতনা ও আদর্শকে বাস্তবায়ন ও প্রয়োগ করা যায় সেদিকে আলোকপাত করেন।

বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বঙ্গবন্ধুর ধর্মনিরপেক্ষতার পাশাপাশি সমাজতান্ত্রিক নীতি বিষয়ে আলাপ করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন রাজনৈতিক তত্ত্বের বিশ্লেষণ করে দেখান, এগুলো এখনো পৃথিবীর জন্য প্রাসঙ্গিক। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর তত্ত্ব যদি প্রতিষ্ঠিত হতো তাহলে বিদ্যমান আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থা থেকে বাংলাদেশ রেহাই পেতো; বরঞ্চ জনপ্রতিনিধি কর্তৃক পরিচালিত একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু করা যেত।

উপস্থিত বক্তারা বঙ্গবন্ধুর ধর্মনিরপেক্ষ নীতি প্রয়োগের দিকে গুরুত্বারোপ করেন। তারা সবাই ধর্মনিরপেক্ষতা মানে যে সকল ধর্মের মানুষদের সমান নাগরিক অধিকার সেদিকে জোর দেন।  জঙ্গিবাদ ও ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহার দমনের জন্য বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনার বাস্তবায়ন করার দিকে জোর দেন।

সকল বক্তা আফগানিস্তানে তালেবানদের উত্থানে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা আশঙ্কা করেন, এর প্রভাব বাংলাদেশেও এসে পড়বে। বাংলাদেশের মৌলবাদীরা কীভাবে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসে এখানে সন্ত্রাস ও হামলা চালিয়েছিল সে ইতিহাসও তারা উল্লেখ করেন।

অনুষ্ঠান শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনীর সভাপতি ও গণহত্যা জাদুঘরের ট্রাস্টি অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবর রহমান।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন গণহত্যা জাদুঘরের ট্রাস্টি সম্পাদক ও বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনীর সাধারণ সম্পাদক  ড. চৌধুরী শহীদ কাদের।

facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmailby feather
ট্যাগসমূহঃ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Current ye@r *