পিছিয়ে পড়া বা দারিদ্র সীমার নীচে বসবাসরত শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে অবহেলিত ও উপেক্ষিত উপকূলীয় অঞ্চলের শিশুরা। শিশুদের মৌলিক অধিকার গুলোর কোনটিই তারা ঠিকমতো পাচ্ছে না। এ সকল অঞ্চলগুলোতে শিশুদের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অপ্রতুলতা, অপরিচ্ছন্ন পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, নিম্নমানের যাতায়াত ব্যবস্থা, সুপেয় পানির সঙ্কট, চিকিৎসা সেবার অব্যবন্থাপনা সহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার স্বলতা শিশুদের অধিকার খর্ব করছে।
জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদের ১৫৪টি ধারার প্রথমেই বলা হয়েছে ‘সবার আগে শিশু।’ সমাজে শিশুর গুরুত্ব মুল্যায়ন ও শিশু অধিকার সুক্ষায় করণীয় সমুদয় কার্যাবলির বাস্তবায়নের প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে উক্ত ধারায়। খুলনা-সাতক্ষীরার মংলা, দাকোপ, কয়রা, পাইকগাছা, শ্যামনগর, মুন্সিগঞ্জ সহ দেশের উপকূলীয় এলাকার শিশুদের জীবনযাত্রা দেশের অন্যান্য এলাকার তুলনায় অত্যন্ত্ নিম্নমানের। তারা রাষ্ট্রের প্রদেয় প্রায় সকল সুযোগ-সুবিধা থেকেই বঞ্চিত এবং লাগাতার প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে সে অবস্থা আরও নাজুক হয়ে পড়ছে।
সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা এবং কিছু কিছু বে-সরকারী সংস্থা শিশু অধিকার সুরক্ষা, শিশুশ্রম নিরসন, শিশুদের মতামতের প্রতি গুরুত্ব প্রদান সহ শিশু বিষয়ক বিভিন্ন কর্যক্রম পরিচালনা করছে। তবে শিশু অধিকার রক্ষায় শিশুদের সার্বিক বিকাশের নিমিত্তে তাদের সফল ও সার্থক ভবিষ্যৎ বিনির্মানে প্রয়োজনের তুলনায় এ কার্যক্রম অত্যন্ত অপ্রতুল। তাই শিশুদের অধিকার রক্ষায় সমাজের বিত্তবান সহ সর্বস্তরের মানুষ কে স্ব স্ব অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে হবে।
শিশুদের জন্য আমাদের করনীয় এবং শিশুদের জন্য প্রযোজ্য বিষয় গুলিকে চিহ্নিত করে তাদের উপযোগী পরিবেশ ও প্রতিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমেই সম্ভব শিশুর স্বাভাবিক বেড়ে ওঠার জন্য অনুকুল অবস্থান সুনিশ্চিত করা। মনে রাখতে হবে ‘শিশুরাই জাতির ভবিষ্যৎ, তাই অধিকার বঞ্চিত শিশু মানেই অধিকার বঞ্চিত জাতি।’ কাজেই পুরো জাতির অধিকার নিশ্চিৎ করতে হলে সবার আগে শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করতে আমাদের কাজ করতে হবে।
Pingback: একজন সাধারণ পাঠক