মাছরাঙা
আনিন্দসুন্দর পাখি,ভয়াল সরিসৃপ ও সুন্দরবনের মৎস্য সম্পদ
সুন্দরবনের পাখিঃ সুন্দরবনে বিপুল সংখ্যক পাখি বাস করে।সুন্দরবনে শর্বাধিক নয় প্রজাতির মাছরাঙা বাস করে। এসব মাছরাঙার মধ্যে আছে ছোট মাছরাঙা,নীল কান মাছরাঙা,খয়রী মাছরাঙা,কালোটুপি মাছরাঙা,সাদাবুক মাছরাঙা,কন্ঠি মাছরাঙা,লাল মাছরাঙা,গরিয়াল মাছরাঙা,ফটকা মাছরাঙা।অন্যান্য পাখিরা হ’ল বন কোকিল,বউ-কথা-কও,খয়েরী হাড়িচাচা, বড় কানা কুয়া, ছোট কানা কুয়া, ভীমরাজ, কেশরাজ,বড় কাবাশি,বুলবুলি,সিপাই বুলবুলি,ছোট সহেলী,সিঁদুরে সহেলী, বসন্ত বাউরি,ভাত শালিক,ঝুট শালিক,নোনা বন শিসমার,নোনা বন সুমচা,কোকিল,কালোমাথা বেনেবউ,সোনাবউ,টিয়া,কমলা-বুক হরিয়াল,কালো ফিঙে, চকচকে ফিঙে, তিলা ঘুঘু, কন্ঠি ঘুঘু, তালচড়াই, পাতি আবাবিল, খয়রিমাথা সুইচোরা, সবুজ সুইচোরা,নীললেজ সুইচোরা,কাজল পাখি,সোনা-কপালী হরবোলা, দোয়েল, সাদা গলা পাখালেজ(fantail), কালোমাথা কটকটিয়া, নীল কটকটিয়া, হুদহুদ, ঘর বাতাসি,বেগুনি মৌ-টুসি,লাল মৌ-টুসি, পাতি কাজল, কমলা পেট ফুলঝুরি, লাল বুক ফুলঝুরি,সিদুর পেট ফুলঝুরি,চশমা পাখি,লাতোরা,সোনালী কাঠ-ঠোকরা,জারাদা কাঠ-ঠোকরা,বড় কাঠ-ঠোকরা, বড় সোনালী কাঠ-ঠোকরা, লাল কাঠ-কাঠোকরা,ফিতা আঁকা কাঠ-ঠোকরা,দাগী-গলা কাঠ-ঠোকরা,ছোট কাঠ-ঠোকরা,ক্ষুদে কাঠ-ঠোকরা,সাদা খঞ্জন, বন খঞ্জন, হলুদ খঞ্জন, নীল বনমালি, কালোমাথা গাংচিল, পানিপায়রা, পাটকেলে গাংচিল, শঙ্খচীল, মেছো চীল,সিন্ধু ঈগল(white bellied sea-eagle),ধুষর মাথা মেছোচীল, বহুরুপী ঈগল,কালোঘাড় চীল,শীরা, তিলাবাজ, বাসকুরাল, শকুন, রাতচোরা, মেছোপেচা, তামাটে মেছোপেচা, ভুতুম পেচা,বড় বক, করচি বক,কানি বক, জিরিয়া, গোটরা, মুরগী বাটান, বড় বাটান,বড়-শিলা বাটান, ছোট বাটান, বাউল বাটান, ছোট গুলিন্দা, হট্টিটি, নিশি বক, ক্ষুদে বক,কুচি বক, ছোট কুচি-বক, বুনোহাস, জিরিয়া হাস, দিগহাস, গইলো হাস (masked finfoot), মদনটাক (lesser adjutant)।
সুন্দরবনের সরীসৃপঃ সুন্দরবনের সরীসৃপদের মধ্যে আছে বিভিন্ন ধরনের সাপ,কুমির ও কচ্ছপ।কিছু সাপ আছে বিষধর,বাকিরা নির্বিষ।বিষধর সাপের মধ্যে তীব্র বিষধর সাপ শঙ্খচূড় বা কিংকোবরা, কেউটে বা গোখরো, জলবোড়া, টিয়া বোড়া বা পিট ভাইপার অন্যতম।নির্বিষ সাপ হ’ল জল ডোড়া,দাড়াস সাপ, বড়শি নাক সামুদ্রিক সাপ, বিশালাকৃতির অজগর বা ইন্ডিয়ান রক পাইথন অন্যতম। কালেভদ্রে বিশাল আকৃতির রক পাইথন’র দেখা মেলে সুন্দরবনের কটকা অভয়ারণ্যের জামতলি এলাকায়। বিশালাকৃতির রক পাইথন তারিয়ে তারিয়ে হরিণ শাবক কে গিলছে এ দৃশ্য শুধু যারা সৌভাগ্যবান তাদের কপালেই জোটে।
লবন পানির কুমিরঃ লবন পানির বিশালাকৃতির অসংখ্য কুমিরের দেখা মেলে সুন্দরবনের অধিকাংশ নদী ও খালগুলিতে। সুন্দরবনের লবন পানির কুমির দৈর্ঘ্যে আট মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। বন বিভাগের হিসাব অনুযায়ী সুন্দরবনে বর্তমানে কুমিরের সংখ্যা দুই শতাধিক।
কচ্ছপঃ বৃহৎ আকৃতির সামুদ্রিক কচ্ছপ অলিভ রিডলে কচ্ছপ সুন্দরবনে পাওয়া যায়। এ কচ্ছপ দৈর্ঘ্যে প্রায় আড়াই ফুট এবং এর ওজন প্রায় ৪৫ কিলোগ্রাম পর্যন্ত হয়।অলিভ রিডলে কচ্ছপের পিঠের খোলস দেখতে হার্ট আকৃতির।কচ্ছপটি দেখতে জলপাই রং’র। এদের স্বভাব-চরিত্র সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানা যায় না। তবে প্রতি বছরই সমুদ্র থেকে সুন্দরবনের বেলাভূমিতে এরা আসে ডিম পাড়তে। স্ত্রী কচ্ছপ রাতের বেলায় বালুচরে এমন জায়গায় গর্ত খুড়ে বাসা বাঁধে যেখানে বড় জোয়ারের পানিও পৌঁছতে পারে না। স্ত্রী কচ্ছপ তার তৈরী বাসায় পিংপং বল আকৃতির শতাধীক ডিম পাড়ে।ডিম পাড়া হয়ে গেলে জলপাই কচ্ছপ আবার ফিরে যায় সমুদ্রে।ডিম ফুটে বাচ্চা হতে সময় লাগে ৫০-৬৫ দিন।সব ডিম থেকেই বাচ্চা হয় না কারণ, এ সব ডিমের অনেকগুলিই শিয়াল, বুনো শুয়োর, গুইসাপ, সাপ, ইদুর, কাক ও সী-গালদের পেটে যায়।
সুন্দরবনের মৎস্য সম্পদঃ সুন্দরবনের ১৮৭৪ বর্গ কিঃ মিঃ এলাকা জলাভূমি। এই জলভাগ বিপুল মৎস্য সম্পদের উৎস।সুন্দরবনের নদীগুলিতে আছে ২১০ প্রজাতীর সাদা মছ, লবস্টার সহ ২৭ প্রজাতীর চিংড়ি ১৩ প্রজাতীর কাঁকড়া ও ৪২ প্রজাতীর মলাস্কা।
সাদা মাছের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হ’ল ইলিশ,ভেটকি,রূপচাঁদা,দাঁতিনা,চিত্রা,কাইন মাগুর,পাঙ্গাস, লইট্টা, ছুরি,মেদ,পার্সে, পোয়া, তাপশী, টেংরা,গলদা চিংড়ি, বাগদা চিংড়ি, চকা চিংড়ি, ইলশা হাঙ্গর, হাতুড় মাথা হাঙ্গর ইত্যাদি।
by
Pingback: সোহাগ গাজী
Pingback: সমাচার
Pingback: সমাচার