আপনি কি একজন অবৈধ (রেজিষ্ট্রেশন ও লাইসেন্স বিহিন) ইজি বাইক ও ইঞ্জিন রিক্সার মালিক বা চালক ? তাহলে আসুন খুলনা মহানগরীতে আপনাকে স্বাগতম! কারণ এ নগরীতে লাইসেন্স ছাড়াই চালানো যাবে আপনার উল্লিখিত যানবাহন, ফলে আপনাকে দিতে হবে না কোন লাইসেন্স ফি, দিতে হবে না কোন ট্যাক্স, নগরীর সব গণপরিবহন (ইজি বাইক ও ইঞ্জিন রিক্সা) এভাবেই চলছে, যদিও নগর কর্তৃপক্ষ মোড়ে মোড়ে মাইক লাগিয়ে গলা ফাটাচ্ছে ট্যাক্স আদায়ের উদ্দেশ্যে!
ইজিবাইক’র লাইসেন্স কে দেবে, বিআরটিএ না সিটি কর্পোরেশন এ বিতর্ক চলমান অবস্থায় ২০১১ সালে খুলনা সিটি কর্পোরেশন দুই হাজার ইজিবাইকের লাইসেন্স প্রদান করে। এ সময় দুই হাজার লাইসেন্স ওয়ালা ইজিবাইকের বিপরীতে নগরীতে চালু হয় পাঁচ হাজারের অধিক ইজিবাইক। এর এক বছরের মাথায় মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে সেগুলির নবায়ন না করা এবং নতুন লাইসেন্স না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ফলে এক বছর পর নগরীতে চলাচলকারী সকল ইজিবাইকই হয়ে পড়ে অবৈধ।
ইজিবাইক’র লাইসেন্স প্রদান বিতর্কের মিমাংসা না হলেও থেমে নেই নতুন নতুন ইজিবাইকের আগমন। কোন সংস্থার নিয়ন্ত্রন না থাকায় নগরীর রাস্তার ধারণ ক্ষমতা ছাড়িয়ে নগরীতে ইজিবাইকের সংখ্যা এখন ১২ থেকে ১৫ হাজারের অধিক বলে জানায় একটি সূত্র, যা প্রতিদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কোন প্রকার লাইসেন্স না থাকায় প্রতি বছর ইজিবাইক মালিকদের নিকট থেকে প্রাপ্ত কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সিটি কর্পোরেশন অর্থাৎ জনগণ। আর কোন সংস্থার নিয়ন্ত্রণ না থাকায় বে-পরওয়া ও সেচ্ছাচারী হয়ে উঠেছে ইজিবাইক চালকগণ।
এ অবস্থায় নগরীতে নতুন করে গোদের উপর বিষফোড়া হিসেবে চালু হয়েছে ইঞ্জিন রিক্সা যা শুরু থেকেই কেসিসি কর্তৃপক্ষ অবৈধ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে এবং লাইসেন্স প্রদান বন্ধ রেখেছে। লাইসেন্স প্রদান বন্ধ থাকলেও বন্ধ নেই ইঞ্জিন রিক্সা চলাচল, বরং প্রতিনিয়ত এর পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে নগরীতে ইঞ্জিন রিক্সার সংখ্যা এখন সাধারণ লাইসেন্সধারী রিক্সার চেয়ে কয়েক হাজার বেশী!
কেসিসি‘র নিষেধাজ্ঞা ও নিয়ন্ত্রন সত্ত্বেও কিভাবে চলছে অবৈধ যানবাহন : এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইঞ্জিন রিক্সার চালক মজিবর, হাসেম, আব্দুল ফকির, মান্নান সহ অন্যরা বলেন, “সকল অবৈধ যানবাহন হ’ল অবৈধ টাকা কামানোর একটি রিজার্ভ ফান্ড। কর্তৃপক্ষ অবৈধ অজুহাতে আমাদের ইঞ্জিন রিক্সা আটক করে এবং আমরা টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে আনি এবং কিছুদিন নির্বিঘ্নে চালানোর সুযোগ পাই।” তাদের অভিযোগ, হাজার হাজার ইঞ্জিন রিক্সা চালকদের কষ্টের রোজগার থেকে কর্তৃপক্ষ ভাগ বসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে লাখ লাখ টাকা যা তাদের উচ্ছেদ করলে আথবা লাইসেন্স দিলে নেওয়া সম্ভব নয়।
ইজি বাইক ও ইঞ্জিন রিক্সা চালকগণ আরও বলেন, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের (কেসিসি, ট্রাফিক পুলিশ) পক্ষ থেকে বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে ইঞ্জিন রিক্সা ও ইজিবাইক আটক করে জরিমানা আদায় করা হলেও তাদের লাইসেন্স ও ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান বা ট্রাফিক আইন বিষয়ে কোন প্রশিক্ষণ প্রদানে এগিয়ে আসেনা কোন সংস্থা, ফলে তারা শুধু জরিমানাই দিয়ে যাচ্ছেন এবং “বৈধ শ্রম” প্রদান করে এক অবৈধ চক্রে ঘুরপাক খাচ্ছেন!
by
সর্বশেষ মন্তব্যসমূহ