মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেছেন, নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীকে বঞ্চিত রেখে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করা সম্ভব নয়।
প্রতিমন্ত্রী আজ বিকেলে খুলনা সরকারি মহিলা কলেজ মিলনায়তনে দিনব্যাপী নারী উন্নয়ন ফোরামের কার্যনির্বাহী সদস্যদের খুলনা বিভাগীয় আঞ্চলিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় উপজেলা গভর্ন্যান্স প্রজেক্ট (ইউপিজিপি) এ সম্মেলনের আয়োজন করে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, নারী ফোরাম গঠনের অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে নারীর ক্ষমতায়ন এবং কিভাবে নারীকে উন্নয়নের ধারায় সম্পৃক্ত করা যায় তা নির্ধারন করা ও বাস্তবায়ন করা। মহিলা জনপ্রতিনিধিদের সব সমস্যার সমাধান করতে না পারলেও সমস্যা সমাধানের চিন্তা সরকারের রয়েছে। পাওয়া না পাওয়র হিসাব পিছে রেখে অব্যাহত গতিতে কাজ করতে হবে। কাজের আগ্রহ ও প্রচেষ্টা থাকলে লক্ষ্যে পৌঁছানো যাবে। নিজেকে তৈরি করতে হবে, যে কোন অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাতে হবে। এ জন্য নারীদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন, শিক্ষা অর্জন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্ব দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে দেশ অনেক এগোলেও বাল্য বিবাহ রোধে আমরা এখনো পিছিয়ে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের দায় সবচেয়ে বেশী। প্রশাসনের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে নারীদের এ ব্যাপারে জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে। বর্তমানে মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ বছর, তা কোন ভাবেই কমানো হবে না বরং আরও বৃদ্ধি করা হবে। নারীদের বেশী বেশী বেগম রোকেয়ার বই পড়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তাঁর আকাঙ্খা পূরণে আমাদের কাজ করতে হবে।
অংশগ্রহণকারী বক্তারা কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন বৈষম্যের কথা তুলে ধরেন। তারা জনপ্রতিনিধিদের আর্থিক সুবিধা বৃদ্ধি, যাতায়াতের সুব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং সকল উন্নয়নমূলক কাজে নারীদের সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানান।
সম্মেলনে খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলা উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের বিপুল সংখ্যাক নারী উন্নয়ন ফোরামের সদস্য অংশগ্রহণ করেন।
প্রসঙ্গত, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক কার্যক্রমে নারী সদস্যদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি, পরিষদের সামগ্রিক কার্যক্রম অধিকতর কার্যকরী ও নারী বান্ধব করা, সদস্যদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও জেন্ডার সংবেদনশীল করার উদ্দেশ্য ২০১৩ সালে স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগে প্রথম পর্যায়ে খুলনাসহ দেশের সাতটি জেলার ৬৫টি উপজেলা পর্যায়ে নারী উন্নয়ন ফোরাম গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়। এ পর্যন্ত খুলনা বিভাগের ১০টি জেলা এবং ৫৯টি উপজেলায় মোট ৫১০টি নারী উন্নয়ন ফোরাম গঠন করা হয়েছে, যার মাধ্যমে ষোল হাজারের বেশি নির্বাচিত নারী জনপ্রতিনিধি যুক্ত হয়েছেন।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মোঃ আবদুস সামাদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন খুলনা জেলা পরিষদ প্রশাসক শেখ হারুনুর রশিদ, খুলনার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক দীপংকর বিশ্বাস এবং বিএল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর গুলসান আরা বেগম। অন্যান্যর মধ্যে বক্তৃতা করেন ইউনিসেফের খুলনা আঞ্চলিক প্রধান কফিল উদ্দিন।
by
সর্বশেষ মন্তব্যসমূহ