বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর ৯৮তম জন্মদিবস ও জাতীয় শিশু দিবস-২০১৭ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে খুলনায় উদ্যাপিত হয়। এ উপলক্ষে নগরীতে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, র্যালি, শিশু সমাবেশ, বক্তৃতা, কবিতা পাঠ, রচনা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দোয়া-মাহফিলসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে সকালে খুলনা বয়রা মহিলা কলেজ মিলনায়তনে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় শিশু সমাবেশ, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলার নিভৃত এক পল¬ীতে জন্মগ্রহণ করে এদেশের মাটি, মানুষ, ধানক্ষেত, নদীনালা সবকিছুকে হৃদয় দিয়ে অনুভব করেছিলেন। তিনি ছিলেন মনে প্রাণে বাঙালী। বাংলার জনগণ ছিল তাঁর প্রাণ, চিন্তা চেতনায় ছিল বাংলাদেশ তাই তাঁর লক্ষ্য ছিল বাংলার স্বাধীনতা। তিনি বলেন, আজকের দিনটিকে শিশু দিবস ঘোষনা করার উদ্দেশ্য হলো আজকের শিশু আগামী দিনের নেতা। দেশ পরিচালনায় সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে যেন আজকের শিশুরা দেশ প্রেমিক মানুষ হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে তার শিক্ষা নিতে হবে বঙ্গবন্ধুর জীবনের আদর্শ থেকে। প্রতিমন্ত্রী উপস্থিত শিশু কিশোরদের উদ্দেশ্যে বলেন, হৃদয় যখন মানুষের জন্য উদ্বেলিত হয় তখন দেশের জন্য ত্যাগ স্বীকার করতে এমনকি জীবন দিতেও পিছপা হয়না। তাই বঙ্গবন্ধুর মত বিকশিত হয়ে দেশপ্রেমিক মানুষ হিসেবে তিনি শিশুদেরকে সমাজের প্রতি দায়িত্বশীল হবার আহবান জানান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খুলনা জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান। বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ ফারুক হোসেন, খুলনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশিদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম শফিউল¬াহ, বয়রা মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর রওশন আকতার এবং বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ খুলনা জেলা ইউনিট কমান্ডার সরদার মাহবুবার রহমান। স্বাগত বক্তৃতা করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ গিয়াস উদ্দিন।
আলোচনা সভা শেষে প্রধান অতিথি জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসন ও শিশু একাডেমী আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার প্রদান করেন। পরে সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয় ।
এর আগে সকালে এক বর্ণাঢ্য র্যালি নিউ মার্কেট হতে শুরু হয়ে খুলনা বেতার প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। পরে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। র্যালিতে তালুকদার আব্দুল খালেক এমপি, মুহাম্মদ মিজানুর রহমান এমপি, খুলনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশিদ সহ খুলনা বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মচারী, সরকারি কর্মচারী, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
দুপুরে দুঃস্থ ও ভবঘুরে শিশুদের আপ্যায়ন, বাদ জোহর সকল মসজিদে বিশেষ দোয়া ও অন্যান্য উপসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতির পিতার জীবন ও আদর্শ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা সম্পর্কে আলোচনা, জাতির পিতার জীবনাদর্শের উপর তথ্যভিত্তিক ভ্রাম্যমাণ চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, সংবাদপত্রসমূহে বিশেষ নিবন্ধ ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশ বেতার খুলনা দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠানমালাও প্রচার করে। সকালে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণের আয়োজন করা হয়।
এ ছাড়াও দিবসটি পালন উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পৃথক পৃথক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
by
সর্বশেষ মন্তব্যসমূহ