নির্দিষ্ট সমেয়ের আগে কোনো নির্বাচন নয় দুইআনা মন্ত্রী ধরে ক্ষমতায় যাওয়া যাবে না
বিপুল উৎসাহ ও উদ্দিপনা নিয়ে আজ খুলনা সার্কিটহাউস ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়েছে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ’র ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। বেলা সাড়ে ১২টায় আওয়ামী লীগ’র প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
প্রয়াত সাংবাদিক মানিক সাহা’র প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, এর আগের সম্মেলনের দিন দুপুরে খুলনায় সন্ত্রাসীরা মানিক সাহাকে বোমা মেরে হত্যা করেছিলো। তখন ছিলো বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার। তারা খুলনা সহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে পরিণত করেছিলো সন্ত্রাসের চারণভূমি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সেই সন্ত্রাস নির্মূল করে এ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সহ আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে হত্যা করে পাকিস্তানের দোসররা মনে করেছিলো বাংলাদেশ থেকে আওয়ামী লীগ, গণতন্ত্র ও অসাম্প্রদায়ীকতাকে নির্মূল করেছে, কিন্তু এ দেশের জনগণ আবার আওয়ামী লীগকে প্রতিষ্ঠিত করেছে, গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছে এবং অসাম্প্রদায়ীক রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত করেছে।
সম্মেলনের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’র সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ শুধু একটি দল নয়, একটি সংস্কৃতি ও এ দেশের ঐতিহ্য। বাংলাদেশ স্বাধীন করার জন্য, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য আওয়ামী লীগ নেতারা রক্ত দিয়েছে। এমন কোন আন্দোলন এ ভূখন্ডে হয় নি যা আওয়ামী লীগ ছাড়া সফল হয়েছে। তিনি বলেন, বীরের দেশ বাংলাদেশ আর বীরের দল আওয়ামী লীগ।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া দুই বার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন অথচ আমেরিকার দুইআনা মন্ত্রী নিশা বিসওয়াল দেশাই’র সামনে শিশুর মত বসে আছেন মন্ত্রনার অশায়। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন আর সেই অবস্থায় নেই, বর্তমান সংসদের মেয়াদ পূর্ণহওয়ার একদিন আগেও নির্বাচন হবে না।
বক্তারা বলেন, খালেদা জিয়া ২১ আগষ্ট আওয়ামী লীগ’র সভায় গ্রেনেড হামলা চালিয়ে শেখ হাসিনা সহ আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার ব্যবস্থা করেছিলো, আর এ কারণেই তার আগে ঘোষণা করেছিলো যে আওয়ামী লীগ ৫০ বছরেও ক্ষমতায় আসতে পারবে না। এর পর তারা জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে রাজাকার নিজামী-মুজাহিদদের মন্ত্রী বানিয়ে জঙ্গি নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করে।
বক্তারা বলেন, আজ যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হয়েছে তখন খালেদা জিয়া ঘোষণা করেছেন নিজামী-মুজাহিদ-সাকা চৌধুরীরা যুদ্ধাপরাধী নয়, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। এর পর যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে ও নির্বাচন বানচাল করতে হরতালের নামে জ্বালাও-পোড়াও ও ভাংচুর চালিয়ে জীবন্ত পুড়িয়ে দেশের আড়াই হাজার মানুষকে হত্যা করেছে, পুলিশ হত্যা করেছে, এ জন্য খালেদা জিয়ারও বিচার হবে।
বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগ’র নেতৃত্বে দেশ আজ খাদ্যে সয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। দেশে আজ কেউ বলে না ভাত দাও, আজ সবাই বলে বিদ্যুৎ দাও, রাস্তা দাও, স্কুল দাও। দারিদ্র ঘুচিয়ে দেশ আজ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হচ্ছে অথচ বিএনপি-জামায়াত জোট দেশের অগ্রগতি ধ্বংস করে জঙ্গিবাদ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছে।
অন্যান্যের মধ্যে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগ’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এস এম কামাল, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হারুনুর রশিদ, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা রশিদী সুজা, সংসদ সদস্য বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, আওয়ামী লীগ’র তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এ্যাডঃ আফজাল হোসেন, সংসদ সদস্য ডঃ আব্দুর রাজ্জাক, সংসদ সদস্য বিএম মোজাম্মেল হক, আওয়ামী লীগ’র কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সম্পাদক মাহাবুবুল হক হানিফ, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ। সম্মেলনে রিপোর্ট পাঠ করেন খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ’র সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান এবং সভাপতিত্ব করেন মহানগর আওয়ামী লীগ’র সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক।
by
সর্বশেষ মন্তব্যসমূহ