সারা বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার কমে ২৬-৩১ শতাংশ হলেও খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাটসহ উপকূলীয় অঞ্চলের দারিদ্র্যের হার কমছে না। বরং ৪২ শতাংশ থেকে প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে গরিব মানুষের হার। অবর্ণনীয় দারিদ্র্যের কারণে প্রতিনিয়ত দক্ষিণ অঞ্চল থেকে মানুষ অভিবাসী হয়ে দেশের অন্যান্য অঞ্চলে মানবেতর জীবনযাপন করছে। অথচ সুন্দরবনসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এ অঞ্চলে এক সময় বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ মৌসুমি শ্রমিকের কাজ করতে আসতো। উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণে আঞ্চলিক বৈষম্য এবং প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগের কারণে এ অঞ্চলের মানুষের জীবীকা নির্বাহের পথ ক্রমশই সংকুচিত হয়ে গেছে। আঞ্চলিক বৈষম্য দূর করে বনজীবী ও কৃষিজীবীদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল তথা বাংলাদেশের দারিদ্র্য দূর করা সম্ভব।
আজ ১৭ অক্টোবর খুলনা প্রেসক্লাব চত্ত্বরে বিশ্ব দারিদ্র্য নিরসন দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন।
উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্মজোট (ক্লিন), হিউম্যানিটিওয়াচ, নোয়াখালী রুর্যাল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (এনআরডিএস), বাংলাদেশ উন্নয়ন পরিষদ (বিইউপি), খাদ্য নিরাপত্তা জোট (খানি-বাংলাদেশ), অ্যাকশন-২০১৫ ও বিশ্ব দারিদ্র্য নিরসন জোট (জিক্যাপ)-এর যৌথ উদ্যোগে মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন ২০১৫ সালের মধ্যে পৃথিবীর গরিব মানুষের সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে ২০০০ সালে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) গ্রহণ করেন। কিন্তু গত ১৫ বছরে দারিদ্র্য কমার বদলে ধনী ও গরিবের মধ্যে পার্থক্য আরো বেড়েছে। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর ২১ ভাগ মানুষ এখনও ক্ষুধাপেটে ঘুমোতে যায়। কৃষকের কাছ থেকে জমির অধিকার চলে যাচ্ছে ধনী ও বহুজাতিক কোম্পানির হাতে। জমি, জলা, জঙ্গলের উপর এখনও সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয় নি বরং ক্রমেই তা সংকুচিত হচ্ছে।
এরই মধ্যে আগামী ২০১৫ সালে ১০০ ভাগ দারিদ্র্য দূর করার লক্ষ্যে স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এসডিজি’র মাধ্যমে যদি বনজীবীসহ প্রাকৃতিক সম্পদ-নির্ভর জনগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিত করা না যায় তাহলে গরিব মানুষের সংখ্যা আরো বেড়ে যাবে।
by
সর্বশেষ মন্তব্যসমূহ