“চিকিৎসাযোগ্য ও প্রতিরোধযোগ্য অন্ধত্বই পরিহারযোগ্য অন্ধত্ব।” আজ পরিহারযোগ্য শিশু অন্ধত্ব প্রতিরোধ বিষয়ক এক সাংবাদিক কর্মশালায়র বিশেসজ্ঞ চিকিৎসকগণ এ কথা বলেন। ম্যাস-লাইন মিডিয়া সেন্টারের উদ্যোগে এ্যাওসেড সেমিনার কক্ষে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
চিকিৎসকগণ বলেন, শুধুমাত্র জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমেই লক্ষ লক্ষ শিশুকে চির অন্ধত্বের হাত থেকে রক্ষাকরা সম্ভব। চোখের এমন কিছু রোগ আছে যা থেকে মানুষ অন্ধ হয়ে যেতে পারে, কিন্তু সময় মত সঠিক চিকিৎসা করা সম্ভব হলে এ রোগগুলি সম্পূর্ণ ভালো হয়। এর মধ্যে শিশুদের চোখে ছানি পড়া একটি প্রধান রোগ যা সময় মত সঠিক চিকিৎসা হলে সম্পূর্ণ সুস্থ্য হওয়া সম্ভব, অন্যথায় শিশু চির দিনের জন্য অন্ধ হয়ে যাবে।
বক্তারা বলেন, দেশের শহর ও গ্রামে লক্ষ লক্ষ অভিভাবক আছেন যারা অশিক্ষা-কুশিক্ষা, দারিদ্র, নিম্নমানের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি কারণে বিভিন্ন সংস্কারে ভোগেন এবং শিশুদের চোখের বিভিন্ন রোগ সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারনা পোষণ করেন। এ কারণে শিশুর চোখের রোগ নিয়ে তারা অবহেলা করেন অথবা অপচিকিৎসার দারস্থ হন। এ সকল রোগের অনেকগুলিই সঠিক চিকিৎসায় ভাল হয়, কিন্তু অবহেলায় সময় ক্ষেপন ও চক্ষু চিকিৎসকের দারস্থ না হওয়ায় বহু শিশুই সারাজীবনের জন্য অন্ধ হয়ে যায়। এ অবস্থায় ব্যাপক জনসচেতনতাই হাজার হাজার শিশুকে অন্ধত্বের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। তাই শহরে-গ্রামে সকল স্তরের মানুষের মাঝে একটি বার্তা পৌঁছানো জরুরী, আর তা হ’ল শিশু সহ সব বয়সের মানুষের চোখের যে কোন সমস্যায় সময় নষ্ট না করে দ্রুত নিকটস্থ চক্ষু হাসপাতালে অথবা চক্ষু চিকিৎসকের নিকট যেতে হবে, অন্যথায় স্থায়ী অন্ধত্বের ঝুকিতে পড়তে হবে!
বক্তারা আরও বলেন, আন্তর্জাতিক চক্ষু চিকিৎসা সংস্থা অরবিস’র সহয়তায় দেশের বিভিন্ন স্থানে ১০টি বিশেষায়ীত শিশু চক্ষু চিকিৎসা কেন্দ্র নির্মিত হয়েছে, যার একটি নির্মিত হয়েছে খুলনা বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালে। অরবিস’র সহয়তায়ই এদেশে প্রথম চোখের মাইক্রো সার্জারী শুরু হয়, যা এখন অরবিস প্রতিষ্ঠিত শিশু চক্ষু চিকিৎসা কেন্দ্রগুলিতেও হচ্ছে। পাশাপাশি অরবিস’র সহয়তায় দেশের বিভিন্ন চক্ষু হাসপাতালের আধুনিকায়ন, চিকিৎসকদের বিভিন্ন বিষয়ে আধুনিক প্রশিক্ষন প্রদানের ফলে দেশের চক্ষু চিকিৎসায় এসেছে বৈপ্লবীক পরিবতন। পরিবর্তিত এ অবস্থার সম্পূর্ণ সদ্ব্যাবহারে প্রয়োজন অন্ধত্বের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার মাধ্যমে ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টি করা।
কর্মশালায় বিশেষজ্ঞ হিসাবে বক্তৃতা করেন ডাঃ নাহিদ ফেরদৌসী ও ডাঃ মোঃ আব্দুর রব। স্বাগত বক্তৃতা করেন চীফ অব অপারেশন, ম্যাচ-লাইন মিডিয়া সেন্টার, আরশাদ সিদ্দিকী। সাংবাদিকতা বিষয়ক আলোচনা করেন ব্যুরো প্রধান, কালের কন্ঠ,খুলনা, গৌরাঙ্গ নন্দী।
by
সর্বশেষ মন্তব্যসমূহ