আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের সাথে বাংলাদেশ ব্যাংক’র গভর্ন’র সভা অনুষ্ঠিত

আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের সাথে বাংলাদেশ ব্যাংক’র গভর্নর আজ সকালে এক সভায় মিলিত হন। তিনি বলেন, দেশের আর্থিক ব্যবস্থায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

ব্যাংক-ভিত্তিক আর্থিক বাজারে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গৃহীত নানা সৃজনশীল উদ্যোগ বাস্তবায়নে ব্যাংকগুলোর পাশাপাশি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও স্বতঃস্ফূর্তভাবে তা গ্রহণ করছে। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকিং খাতে বহুমুখী পরিবর্তনের সূচনা করেছে। বিচক্ষণ মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, ব্যাংকিং খাতের প্রুডেন্সিয়াল রেগুলেশন ও সুপারভিশন শক্তিশালীকরণ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ সমগ্র ব্যাংকিং খাতের আধুনিকায়নের জন্যে ডিজিটাইজেশন কর্মসূচি গ্রহণ, অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষে দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনতে ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন কর্মসূচি গ্রহণ, আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সিস্টেমিক ঝুঁকি পর্যালোচনার জন্যে ম্যাক্রো প্রুডেন্সিয়াল তত্ত্বাবধান জোরদারকরণ, ব্যাংকের ক্ষুদ্র আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষায় ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স বিভাগ স্থাপনসহ এক্ষেত্রে মনিটরিং জোরদারকরণ, গ্রাহকদের উন্নত সেবা নিশ্চিত করতে গ্রাহক স্বার্থ সংরক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের মতো নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। বহুমুখী বিনিয়োগ সেবা ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার নানাবিধ পরিসেবার মাধ্যমে দেশের আর্থিক মধ্যস্থতার কার্যক্রমকে আরো বেগবান করতে আপনাদের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক ভিত্তি সুদৃঢ়করণ ও এ খাতে শৃঙ্খলা রক্ষায় বাংলাদেশ ব্যাংক সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

 

আগের সভায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মূলধন ভিত্তি শক্তিশালীকরণে যে তিনটি প্রস্তাব ছিল, তার মধ্যে একটি অর্থাৎ ব্যাংকের মতো Revaluation reserve for equity instruments  এর ১০ শতাংশ কে ইতোমধ্যে Tier ২ মূলধনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। গভর্নর বলেন, আজকের সভায় ডকুমেন্টেশন ফি পুনর্বিবেচনা, ঋণ বিতরণ পরবর্তী সময়ে গ্রাহকদের ফিডব্যাক সংগ্রহ, শাখা স্থাপনের নীতিমালা শিথিলকরণ, লিজ ফাইন্যান্সিংয়ের মাধ্যমে বিলাসবহুল গাড়ি ক্রয় সংক্রান্ত নীতিমালা সংশোধন, শরিয়াহ্‌ভিত্তিক এসএমই পুনঃঅর্থায়ন স্কীম সুবিধা চালু ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার আগে দু’একটি কথা বলতে চাই।

আপনারা ডকুমেন্টেশন ফি দ্বিগুণ বাড়িয়ে ১.০০ শতাংশে উন্নীত করতে চেয়েছেন। ডকুমেন্টেশন ফি দ্বিগুণ করলে গ্রাহকদের ঋণভার বাড়াবে, যা প্রকারান্তরে ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে। বিদ্যমান গাইডলাইন অনুযায়ী ডকুমেন্টেশন ফি ছাড়াও লিগ্যাল ফি আপনারা গ্রাহকদের কাছ থেকেই গ্রহণ করতে পারেন। তাই নতুন করে ফি আরোপ করা যথাযথ হবে কিনা সেটি বিবেচ্য। বিদ্যমান নীতিমালায় গ্রাহকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষে নির্দিষ্ট সময়ভিত্তিক ফিডব্যাক গ্রহণ করার যে নির্দেশনা রয়েছে তা আপনারা প্রত্যাহার করার অনুরোধ করেছেন। কিন্তু আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজস্ব মনিটরিংয়ের সুবিধার্থে এ ধরনের ফিডব্যাক গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। বছরে অন্তত একবার গ্রাহকের ফিডব্যাক গ্রহণ করলে তাদের সঙ্গে আপনাদের সম্পর্ক আরো জোরদার হবে বলে আমি মনে করি। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নতুন শাখা স্থাপনের ক্ষেত্রে পরিচালকদের সিআইবি গ্রহণ বাধ্যতামূলক। তবে, শাখার প্রস্তাবিত স্থান পরিদর্শনের ক্ষেত্রে ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগের পাশাপাশি ক্ষেত্রভেদে আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগও পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে। লিজ ফাইন্যান্সিংয়ের মাধ্যমে বিলাসবহুল গাড়ি ক্রয়ে উচ্চব্যয় পরিহার সংক্রান্ত বিদ্যমান নীতিমালা সংশোধনের বিষয়টি আপাতত বিবেচনার অবকাশ নেই। আপনাদের জন্যে শরিয়াহ্‌ভিত্তিক এসএমই পুনঃঅর্থায়ন তহবিল চালুর বিষয়টি আমাদের এসএমই বিভাগ পর্যালোচনা করছে। এ বিষয়ে গৃহীত সিদ্ধান্ত যথাসময়ে আপনাদের অবহতি করা হবে।

facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmailby feather

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Current ye@r *