মহান বিজয় দিবস-২০১৫ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদ্যাপনের লক্ষ্যে জাতীয় কর্মসূচির আলোকে খুলনা জেলা প্রশাসন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
১৬ ডিসেম্বর সূর্যোদয়ের সাথে সাথে গল্লামারী শহীদ স্মৃতি সৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হবে। প্রত্যুষে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনে একত্রিশবার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের শুভ সূচনা করা হবে। ওইদিন সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত, বেসরকারি ভবন ও প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। এছাড়া নগরীর সকল সুউচ্চ ভবনে নির্ধারিত বড় মাপের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে।
সকাল সাড়ে আটটায় খুলনা জিলা স্কুল মাঠে বিভাগীয় কমিশনার আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবেন। একই স্থানে সকাল ৮-৪০টায় বীর মুক্তিযোদ্ধা, পুলিশ, আনসার-ভিডিপি, বিএনসিসি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, স্কুল,কলেজ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান, শিশু-কিশোর সংগঠন, কারারক্ষী, বাংলাদেশ স্কাউট, রোভার স্কাউট, গার্লসগাইড কর্তৃক কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান এবং শরীরচর্চা প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে।
ওই দিন সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। সকাল ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত নগরীর সিনেমা হলসমূহে শিক্ষার্থীদের জন্য বিনা টিকিটে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হবে। বেলা ১২টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খুলনা পিআইডি’র আয়োজনে জিলা স্কুল প্রাঙ্গনে মুক্তিযুদ্ধের ওপর স্থিরচিত্র প্রদর্শন করা হবে। বেলা ১২টা হতে বিকেল চারটা পর্যন্ত বিভাগীয় জাদুঘর বিনা টিকেটে সর্বসাধারণের জন্য উম্মুক্ত রাখা হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সন্তানদের সংবর্ধনা প্রদান করা হবে বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে। দুপুর দুইটা বা সুবিধাজনক সময়ে হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, শিশুসদন ও ভবঘুরে প্রতিষ্ঠানসমূহে বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হবে। স্থানীয় নৌ-বাহিনীর জাহাজ জনসাধারণের দর্শনের জন্য বিআইডব্লিউটিএ রকেট ঘাটে বেলা দুইটা হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত উম্মুক্ত রাখা হবে।
জাতির শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করে বাদ যোহর বা সুবিধাজনক সময়ে মসজিদে বিশেষ মোনাজাত এবং মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা করা হবে। বেলা সাড়ে তিনটায় পাইওনিয়ার মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় মাঠে মহিলাদের ক্রীড়া অনুষ্ঠান ও মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক আলোচনা সভা এবং সন্ধ্যা ছ’টায় হাদিস পার্কে “সুখী, সমৃদ্ধ, বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তির সার্বজনীন ব্যবহার এবং মুক্তিযুদ্ধ” শীর্ষক আলোচনা, সিম্পোজিয়াম এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
এদিন নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সংবাদপত্রসমূহে বিশেষ নিবন্ধ, সাহিত্য, সাময়িকী ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে। শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপসমূহ জাতীয় পতাকাসহ বিভিন্ন পতাকা দিয়ে সজ্জিত করা হবে। বিআইডব্লিউটিএ ও লঞ্চ ঘাটে স্টিমার, লঞ্চ ও জাহাজ সজ্জিতকরণ করা হবে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গিলাতলা শিশুপার্ক, বয়রা শিশু পার্ক ও খালিশপুর ওয়ান্ডারল্যান্ড শিশুপার্ক বিনাটিকেটে শিশুদের জন্য উম্মুক্ত রাখা হবে। সুবিধাজনক সময়ে খুলনা সিটি কর্পোরেশন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা জানাবে। ১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর শহীদ হাদিস পার্কে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক দুর্লভ প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হবে। ১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর সকাল ১০টা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত উমেশচন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরিতে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক দুর্লভ ছবি ও পুস্তক প্রদর্শন করা হবে।
১৪ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে রচনা প্রতিযোগিতা, ১৭ ডিসেম্বর উমেশচন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরিতে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক আলোচনা ও কবিতা আবৃত্তি, ১৫ ডিসেম্বর শিশু একাডেমীর আয়োজনে শিশুদের চিত্রাংকন, আবৃত্তি ও দেশাত্মবোধক সংগীত প্রতিযোগিতা এবং ১৩ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে ১৩-১৫ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে চলচ্চিত্র উৎসব।
১৭ ডিসেম্বর রূপসাঘাটে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমীনের বীরত্ব ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। ১৬ হতে ১৮ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে খুলনা বিসিক’র উদ্যোগে জিয়া হল প্রাঙ্গনে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলার আয়োজন করা হবে।
by
সর্বশেষ মন্তব্যসমূহ