খুলনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় আজ মহান বিজয় দিবস-২০১৫ উদ্যাপিত হয়। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে গল্লামারী শহীদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়।
প্রত্যুষে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনে ৩১বার তোপধ্বনির মধ্যদিয়ে দিবসের শুভ সূচনা করা হয়। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত এবং বেসরকারি ভবন ও প্রতিষ্ঠানসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ও সড়ক দ্বীপসমূহ জাতীয় পতাকা দ্বারা সজ্জিত করা হয়।
সকাল সাড়ে আটটায় খুলনা জিলা স্কুল মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মোঃ আবদুস সামাদ জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন । পরে সেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন বাহিনী/প্রতিষ্ঠানের বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান ও শরীরচর্চা প্রদর্শনী হয়। খুলনা জিলা স্কুল প্রাঙ্গণে পিআইডি’র আয়োজনে দিনব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের ওপর স্থিরচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সন্তানদের সংবর্ধনা দেয়া হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন বিভাগীয় কমিশনার মোঃ আবদুস সামাদ। খুলনা জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেএমপি’র ভারপ্রপ্ত পুলিশ কমিশনার মোঃ মাহবুব হাকিম, খুলনা জেলা পরিষদ প্রশাসক শেখ হারুনুর রশিদ এবং পুলিশ সুপার মোঃ হাবিবুর রহমান। এ সময় অন্যান্যর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন।
হাসপাতাল, জেলখানা, এতিমখানা, শিশুসদন ও ভবঘুরে প্রতিষ্ঠানসমূহে দিবসটি উপলক্ষে বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হয়। জাতির শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করে বাদ জোহর নগরীর মসজিদ সমূহে বিশেষ মোনাজাত এবং মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।
বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত নগরীর সিনেমা হলসমূহে বিনা টিকিটে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়। বেলা দুইটা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত স্থানীয় নৌ-বাহিনীর জাহাজ খুলনাস্থ বিআইডবি¬উটিএ রকেট ঘাটে জনসাধারণের দর্শনের জন্য উম্মুক্ত রাখা হয়।
বিকেলে পাইওনিয়ার মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে মহিলাদের ক্রীড়া অনুষ্ঠান এবং খুলনা জিলা স্কুলে খুলনা সিটি কর্পোরেশন বনাম জেলা প্রশাসন একাদশের মধ্যে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। পরে কেসিসি’র ভারপ্রাপ্ত মেয়র মোঃ আনিছুর রহমান বিশ্বাস প্রধান অতিথি হিসেবে উভয় দলের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
সন্ধ্যায় খুলনা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে শহীদ হাদিস পার্কে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আলোচনার বিষয় ছিল- সুখী সমৃদ্ধ, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বজনীন ব্যবহার এবং মুক্তিযুদ্ধ।
দিবসটি উপলক্ষ্যে খুলনা বেতার বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার এবং স্থানীয় সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে। ১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর উমেশচন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরী মিলনায়তনে ১০-৫টা পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের দুর্লভ ছবি ও পুস্তক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। বিভাগীয় যাদুঘর ১২টা হতে চারটা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উম্মুক্ত রাখা হয়।
এছাড়াও দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পৃথক পৃথক কর্মসূচির আয়োজন করে।
by
সর্বশেষ মন্তব্যসমূহ