খুলনা জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা- যে কোন মূল্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে হবে

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেছেন, সকলের ন্যায় সঙ্গত অধিকার নিশ্চিত করা গণতন্ত্রের মূলকথা। জনগণের এ অধিকার নিশ্চিত করতে যে কোন মূল্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে হবে। তিনি বর্তমান সরকারের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহবান জানান।

প্রতিমন্ত্রী আজ সকালে খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় প্রধান উপদেষ্টার বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
সভায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সিটি কর্পোরেশন সংলগ্ন বিভিন্ন উপজেলাধীন কিছু কিছু ইউনিয়নের সীমানা নির্ধারণে জটিলতার কারণে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হচ্ছে। অবিলম্বে এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। ভূমিহীনদের জমি বন্দোবস্ত দেয়ার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে সাধারণ মানুষ হয়রানীর শিকার না হয়।

সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য ঠেকাতে ও যে কোন অনাহুত পরিস্থিতি মোকাবেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর, তবে সাধারণ মানুষের সহযোগিতা নাশকতা রোধে বড় ভূমিকা রাখবে। জনগণকে নিরাপত্তা দিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় দু’জন পুলিশ অফিসারকে প্রধান অতিথি অভিনন্দন ও পুরস্কার প্রদান করেন। তাদের উভয়কে ১০ হাজার টাকা করে চেক প্রদান করা হয়।

নগরীতে গ্রীলকাটা, মোটরসাইকেল চুরি, ছিনতাইয়ের মত ঘটনা ঘটছে। মেলার নামে বিভিন্ন স্থানে জুয়াখেলা ও অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধ করতে সভায় সিদ্ধান্ত হয়, কারণ এর সূত্র ধরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। খুলনার স্টেশন রোডে প্রবেশের মুখে ট্রাক লোড ও আনলোড করার কারণে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে, ফলে যাত্রীরা ট্রেন ফেল করাসহ দূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এ ব্যাপারে অনতিবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। ভরাট হয়ে যাওয়া খান খননে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে ভূমিসংক্রান্ত জটিলতা নিরসন সহজ হয়। মাছে পুশ বন্ধে জরুরী ভিত্তিতে উদ্যোগ নিতে মৎস্য বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। এ জন্য কোয়ালিটি কন্ট্রোলের সাথে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের আড়ত এলাকায় সার্বক্ষণিক তদারকীর জন্য বলা হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন খুলনা জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তফা কামাল। সভায় খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য এস.এম.মোস্তফা রশিদী, খুলনা জেলা পরিষদ প্রশাসক শেখ হারুনুর রশীদ, পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা চেয়ারম্যান, বিজিবি এবং কেএমপি’র প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।

সভায় আইন-শৃঙ্খলা প্রতিবেদনে জানানো হয় খুলনা জেলার নয়টি থানায় গত ডিসেম্বর(২০১৪) মাসে ডাকাতি ১টি, রাহাজানি ২টি, চুরি ০৩টি, খুন ০৪টি, অস্ত্র আইনে ০৫টি, ধর্ষণ ০৫টি, নারী ও শিশু নির্যাতন ২৩টি, নারী ও শিশু পাচার ০৯টি, মাদকদ্রব্য ২৩টি এবং অন্যান্য আইনে ৮৫টি সহ মোট ১৬০টি মামলা দায়ের হয়। গত নভেম্বর(২০১৪) মাসে মামলা দায়ের হয়েছিল ১৬৫টি।

মহানগরীর আটটি থানায় গত ডিসেম্বর(২০১৪) মাসে ডাকাতি ১টি, চুরি ৭টি, খুন ০২টি, অস্ত্র আইনে ০১টি, দ্রুত বিচার ০৩টি, অপহরণ ২টি, নারী ও শিশু নির্যাতন ৯টি, নারী ও শিশু পাচার ০১টি, মাদকদ্রব্য ৫২টি এবং অন্যান্য ৩৯টি সহ মোট ১১৬টি মামলা দায়ের হয়েছে। গত নভেম্বর(২০১৪) মাসে এ সংখ্যা ছিল ১৪৯টি।

facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmailby feather
ট্যাগসমূহঃ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Current ye@r *