দক্ষ শ্রম শক্তি সৃষ্টির অগ্রযাত্রায় খুলনা শিপইয়ার্ড টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার

দেশের অন্যতম জাহাজ তৈরী ও মেরামত ইন্ডাষ্ট্রি খুলনা শিপইয়ার্ড প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫৭ সালে। তবে অনেক দেরিতে হলেও প্রতিষ্ঠানটি ” খুলনা শিপইয়ার্ড টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার” নামে তার কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করেছে ২০১০ সালের ডিসেম্বর মাসে।

দেশের অর্থনীতির প্রধান অঙ্গ শিল্পের দ্রুত বিকাশের সাথে সাথে দেশে ব্যাপক হারে কারিগরি জ্ঞান সম্পন্ন শ্রম শক্তির চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে, কিন্তু দেশের মূলধারার শিক্ষা ব্যবস্থায় কারিগরি শিক্ষা বিপুল ভাবে পিছিয়ে থাকায় ব্যাপক শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে শিল্পের বিকাশে জরুরী ‘দক্ষ’ শ্রম শক্তির। এই শূন্যতাকে কিছুটা হলেও পুরণ করতে গড়ে তোলা হয়েছে খুলনা শিপইয়ার্ড টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার।

সূত্রমতে, খুলনা শিপইয়ার্ড টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারে বর্তমানে যে ট্রেড কোর্সগুলি চালু আছে সেগুলি হ’ল – শিপ ফেব্রিকেশন, ওয়েল্ডিং এন্ড ফেব্রিকেশন, ইলেক্ট্রিক্যাল হাউজ ওয়্যারিং এবং প্লাম্বিং এন্ড পাইপ ফিটিং। এ সকল কোর্সের প্রশিক্ষণ কাল ৬ মাস বা ৩৬০ ঘন্টা।
বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত এবং বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী কর্তৃক পরিচালিত এই কেন্দ্রে প্রতি বছর দু’টি ব্যাচে ছাত্র ভর্তি করা হয়। জানুয়ারী-জুন, এবং জুলাই-ডিসেম্বর। প্রতিটি কোর্সে ৩০ জন করে ছাত্র ভর্তি করা হয়। শুধু ওয়েল্ডিং এন্ড ফেব্রিকেশন কোর্সে ভর্তি করা হয় ৬০ জন, অর্থাৎ প্রতিটি ব্যাচে মোট ১৫০ জন ছাত্র ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।

সূত্রমতে, প্রতিষ্ঠানটি থেকে এ পর্যন্ত ৬৮৮ জন ছাত্র কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়েছেন, যার মধ্য থেকে ২০৮ জন ছাত্র খুলনা শিপইয়ার্ড সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে চাকুরী পেতে সক্ষম হয়েছেন।

প্রতিটি কোর্সের মেয়াদ ৩৬০ ঘন্টা হলেও এ কেন্দ্রের শিক্ষার্থীদের প্রতিটি কোর্সে ৬০০ ঘন্টার অধিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এ ছাড়া দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষক মন্ডলী কর্তৃক তাত্বিক ও ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ প্রদান এবং শিপইয়ার্ড’র সুসজ্জিত অত্যাধুনিক কারিগরি উপকরণ ব্যবহারের সুযোগ শিক্ষার্থীরা গ্রহণ করে থাকে যা একটি অতিরিক্ত সুবিধা।

বিশেষ সুবিধা : এ কেন্দ্রের প্রশিক্ষণার্থীদের কোন কোর্স ফি লাগে না। প্রশিক্ষণার্থীদের প্রতি মাসে ৭০০ টাকা বৃত্তি প্রদান করা হয়, যা শিক্ষণার্থীদের ব্যাঙ্ক একাউন্ট খুলে তার মাধ্যমে প্রদান করা হয়।

উল্লেখ্য, খুলনা শিপইয়ার্ড টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারে মেয়েদের ভর্তি হওয়ার কোনো সুযোগ রাখা হয় নি। শুধু ছেলেরাই এ কেন্দ্রে ভর্তি হতে পারে। তবে মেয়েরাও যাতে এ কেন্দ্রে ভর্তির সুযোগ পেয়ে তাদের যোগ্যতা প্রদর্শনের সুযোগ পায় তার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে যোর দাবি উত্থাপিত হয়েছে এবং হচ্ছে। এ বিষয়ে আলাপকালে প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আব্দুর রাজ্জাক সরদার জানান, মেয়েরাও যাতে এ প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পায় তার জন্য নীতিনির্ধারনী কমিটির পরবর্তী বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা করবেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন অদূর ভবিষ্যতে মেয়েরাও যাতে ভর্তির সুযোগ পায় সে প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmailby feather
ট্যাগসমূহঃ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Current ye@r *