বিশ্বঐতিহ্য সুন্দরবনে নির্বিচারে বৃক্ষ নিধনের প্রতিবাদে খুবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত

সুন্দরবন থেকে কেটে নেওয়া সুন্দয়ী গাছের গোড়া

সুন্দরবন থেকে কেটে নেওয়া সুন্দয়ী গাছের গোড়া

আজ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদী চত্ত্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে বিশ্বঐতিহ্য সুন্দরবনে নির্বিচারে বৃক্ষ নিধনের প্রতিবাদে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

 মানববন্ধন অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, চোরাকারবারীদের ব্যাপক তৎপরতায় পৃথিবীর একক বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবনের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ দিয়ে বলা হয় গত ২১ ও ২২ ডিসেম্বর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক ও পিএইচ ডি ছাএ মোঃ রবিউল আলম প্রধান বন সংরক্ষক’র অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনের বিভিন্ন পয়েন্টে পিএইচডি কাজের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের জন্য যান। এ সময়  রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টা থেকে ভোর চারটা  পর্যন্ত নদী হতে চরে গাছ ফেলতে এবং চর হতে নসিমন/ভটভটি যোগে তা বহন করতে দেখেন। এছাড়া সকালে যখন সুন্দরবনের হাই সাহেবের খাল দিয়ে সুন্দরবনের ভিতর কাজের জন্য প্রবেশ করেন তখন দেখতে পান অসংখ্য গাছের গোড়া ও আগা কাটা। যতো ভিতরের দিকে প্রবেশ করেন ততো দেখতে পান গাছ কাটার দৃশ্য। তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ শেষে টইল ফাঁড়িতে ফিরে এসে কর্তব্যরত অফিসারের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। উপরন্ত তারা গ্রামের নিরীহ অভাবী লোকদের দোষারোপ করেন। বন বিভাগের কর্মীদের দায়িত্ব কর্তব্যের অবহেলায় ও এক শ্রেণির অসাধু ব্যাক্তিদের স্বার্থ চরিতার্থের জন্য বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের ক্ষতি কোনো ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

 

বক্তারা আরও বলেন, এই সুন্দরবন থেকে খুলনা  বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিন, সয়েল সায়েন্স ডিসিপ্লিন, ফিশারিজ এন্ড মেরিন টেকনোলজি ডিসিপ্লিনসহ অনেক ডিসিপ্লিনের অনার্স, মাস্টার্স ও পিএইচ ডি পর্যায়ে অনেক গবেষণা চলে। বিশেষ করে ফরেস্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের সুন্দরবন নিয়ে অনেক  বেশি কার্যক্রম চলে।

 উল্লেখ করা হয় যে, ৬০১৭ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের সুন্দরবন উপকুলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা এবং বাগেরহাটের বির্স্তীন জনপদকে ঝড়-জলোচ্ছাস, বন্যাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগ থেকে রক্ষা করে। বিচিত্র জীববৈচিত্র্যের আধার বাংলাদেশের সুন্দরবন বাণিজ্যিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ ২১০ প্রজাতির মাছ, ৩০০ প্রজাতির পাখি, ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৩৫ প্রজাতির সরীসৃপ এবং ৮ টি উভচর প্রজাতির আবাসস্থল। সুন্দরবন ভালো থাকলে দেশের অর্থনৈতিক বিকাশ ঘটবে। প্রাকৃতিক এই অনন্য সুন্দরবনের জন্য বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশ আজ বিশিষ্ট আসনের অধিকারী।

 সুন্দরবনকে রক্ষার জন্য বন বিভাগের কর্মীরা জবাবদিহীতার সাথে দায়িত্ব পালন করতে বাধ্য। মানববন্ধন থেকে দাবি জানানো হয় যে, অবিলম্বে সুন্দরবনের বৃক্ষনিধনের সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট বিভাগের অফিসার-কর্মচারিসহ  চোরাকারবারীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা  গ্রহণে করতে হবে। মানববন্ধন  থেকে সুন্দরবনকে রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রী, বন ও পরিবেশ মন্ত্রীসহ সংশ্লিট সকল মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।

 মানববন্ধনে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তৃতা করেন ফাল্গুনী কুমার মন্ডল, জাহাঙ্গীর আলম, জয় বিশ্বাস, রোমেল বিশ্বাস, সোহাগ প্রমুখ। মানববন্ধনে শিক্ষার্থী ছাড়াও বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmailby feather
ট্যাগসমূহঃ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Current ye@r *