আমলাদের ষড়যন্ত্রে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে যে বৈসম্যমূলক আইন তৈরী হচ্ছে চিকিৎসকরা তা কোন আবস্থাতেই মেনে নেবে না

চিকিৎসকদের শাস্তির বিধান রেখে বেসরকারী চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্যযে আইন প্রণয়ন হতে যাচ্ছে তাতে রুগী ও চিকিৎসকদের মাঝে দূরত্ব সৃষ্টির আশঙ্কার প্রতিবাদে গতকাল বিএমএ খুলনার উদ্যোগে খুলনা প্রেস ক্রাবে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিএমএ সভাপতি খুলনা, ডাঃ বাহারুল আলম বলেন, চিকিৎসা একটি সমঋদ্ধ বিজ্ঞান যার প্রয়োগ ঝুকিপূর্ণ। রুগীর চিকিৎসা প্রদানের জন্য প্রয়োজন হয় আধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ যন্ত্রপাতি, প্রয়োজনীয় লোকবল ও উপকরণ। এর কোন একটি অপ্রতুল হলেই চিকিৎসার ঝুকি বাড়ে, দুর্ঘটনার কারণে লাঞ্ছিত হন চিকিৎসক বিনা বিচারেই অথচ সরকারের প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করে। অথচ এই ঝুকি নিয়েই চিকিৎসা সেবা প্রদান করে আসছে এ দেশের চিকিৎসক সমাজ।

তিনি বলেন, বৃটিশ ঔপনিবেশিক আমল থেকে রুগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে হত্যা মামরা দায়ের করার আইন চালু আছে। মামলা হলেই পুলিশ গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করলেই বিচারক জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠান, আথচ অপরাধ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসক রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দায়মুক্তি পান না যা বিচারকগণ বিচার ব্যবস্থায় ভোগ করেন। চিকিৎসকগণ একই রাষ্ট্রে এই বৈসম্যের তীব্র বিরোধী।

তিনি বলেন, প্রশাসনিক বৈসম্যের প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে চিকিৎসকদের সাথে বর্তমান ঔপনিবেশিক আমলাতন্ত্রের দ্বন্দ্বের জের হিসেবে আমলারা সরকারকে বিভ্রান্ত করার জন্য এই খসড়া আইন প্রস্তুত করেছে যা মন্ত্রী সভায় অনুমোদনও দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, প্রয়োজন রুগী ও চিকিৎসক উভয়ের সুরক্ষা আইন আর আমলারা করেছে চিকিৎসকদের শাস্তি বিধানের আইন, যা রুগী ও চিকিৎসকদের মধ্যে দূরত্ব তৈরী করবে এবং বিশেষ করে মূমুর্ষূ রুগীরা চিকিৎকের সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে বিপদগ্রস্ত হবেন।

তিনি বলেন, সরকার আমলাদের চক্রান্তের শিকার হয়ে পুরো চিকিৎসা ব্যবস্থাকেই হুমকির মুখে ঠেরে দিতে উদ্যত হয়েছে যা তাদেরই বিপদে ফেলবে। তিনি বলেন, ৩৪ বছর পর হলেও সরকার চিকিৎসকদের চিকিৎসা বাবদ ফি, পরীক্ষা-ণিরিক্ষার ফি সহ অন্যান্য যে সকল বিষয়াদী আইনের দ্বারা নির্ধারণ করার ঘোষণা খসড়ায় উল্লেখ করেছে চিকিৎসকদের তার সাথে কোন বিরোধ নেই, কিন্তু চিকিৎসকদের বক্তব্য হ’ল সে ক্ষেত্রে অন্যান্য সকল পেশাজীবীদের জন্যও সমমানের আইন থাকতে হবে, চিকিৎসকগণ আমলাদের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে কোন প্রকার বৈসম্যমূলক নীতি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করবে। আর প্রস্তাবিত ষড়যন্ত্রমূলক আইন প্রয়োগ করে বাস্তব আবস্তার করণেই চিকিৎসা ব্যবস্থায় যে জটিলতা ডেকে আনবে তার সমাধান সরকারের পক্ষে কেন কারো পক্ষেই সামালদেওয়া সম্ভব হবে না, আর তখন হয়তো সরকারের বোধোদয় হবে কিন্তু তাতে জটিরতার অবসান হবে না। তাই তিনি চিকিৎসক সমাজের পক্ষ থেকে চিকিৎসকদের উপর কোন প্রকার বৈসম্যমূলক আইন চাপিয়ে না দিতে অনুরোধ জানান।

facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmailby feather
ট্যাগসমূহঃ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Current ye@r *