গণপরিবহনে চরম সংকট ভাড়ার নৈরাজ্য আর বিশৃঙ্খলায় অনিশ্চিৎ যাত্রায় খুলনা মহানগরী

খুলনা মহানগরীর গণপরিবহনে এখন চলছে চরম নৈরাজ্য, জবরদস্তি আর পরিবহন সংকট। আর এর সুযোগ নিয়ে রিক্সা-ভ্যান চালকরা ইচ্ছামত ভাড়া আদায় করছে এবং এ নিয়ে মোড়ে মোড়ে ঘটছে ঝগড়াঝাটি-হাতাহাতি! অথচ তা দেখার কেউ নেই। কতদিন এ ভাবে চলবে তা-ও কেউ জানে না! এ অবস্থায় চরম হতাশা আর অসহায়ত্বে দিশাহারা হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। তাদের ক্ষোভ ও অভিযোগ, অযোগ্য আর দায়িত্বহীন সিটি কর্তৃপক্ষই এজন্য দায়ী।

মূলত শহর বা নগরীর সাথে সুনির্দিষ্ট গণপরিবহন অঙ্গাঙ্গি ভাবে জড়িত। একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটির অস্তিত্ব কল্পনা করা অসম্ভব। এক সময় খুলনা শহরের প্রধান গণপরিবহন ছিলো রিক্সা। গত চার বছর যাবৎ ব্যাটারী চালিত ইজি বাইক নগরীতে চালু হওয়ার পর ইজি বাইকই হয়ে ওঠে খুলনা মহানগরীর প্রধান গণপরিবহন।

এ আবস্থায় নগরীতে প্রতিনিয়ত লাগামহীন ভাবে বাড়তে থাকে ইজি বাইকের সংখ্যা এবং ইজি বাইক’র বৃদ্ধির সাথে তাল মিলিয়ে কমতে থাকে রিক্সার সংখ্যা, তবে রিক্সার সংখ্যা কমতে থাকলেও এ সময়ে রিক্সার ভাড়া বৃদ্ধি ঘটে কয়েকগুণ। আর এ সব কিছুই ঘটতে থাকে ইজি বাইক আর রিক্সার চালক ও মালিকদের ইচ্ছায়। এ সব কর্মকান্ডে সিটি কর্পোরেশনের কোনই ভূমিকা ছিলো না, দেখে মনে হয়েছে যে এ নগরীতে কোন পৌর কর্তৃপক্ষ নেই, গণপরিবহন চালক আর মালিকরা স্বাধীন!

উল্লিখিত সময়ে খুলনা সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপঅন্তে একাধিকবার বিভিন্ন পত্রিকায় নগরবাসির অভিযোগের ভিত্তিতে রিক্সা ভাড়া নির্ধারণ ও তার তালিকা প্রকাশের দাবিতে সংবাদ প্রকাশিত হয়। পাশাপাশি নগরীতে চলাচলরত ইজি বাইককে নিয়ন্ত্রণ ও নিয়মতান্ত্রিক কাঠামোয় আনারও দাবি জানানো হয়, কিন্তু সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ নগরবাসির এ সকল অভিযোগ ও দাবির প্রতি আদৌ কর্ণপাত করে নি।

এ আবস্থায় আদালত ও পুলিশ কমিশনারের নির্দেশের কারণে গত ৯ নভেম্বর থেকে নগরীতে ইজি বাইক চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নগরীতে সৃষ্টি হয়েছে চরম গণপরিবহন সংকট। ফলে আবারও রিক্সাই নগরীর প্রধান গণপরিবহনে পরিণত হয়েছে, কিন্তু ইতমধ্যে ১০ লক্ষাধিক নাগরীকের এই শহরে রিক্সার পরিমাণ কমে দাড়িয়েছে ১০ হাজারেরও কম! এ অবস্থায় সৃষ্টি হয়েছে চরম পরিবহন নৈরাজ্য। সাধারন মানুষের নিকট থেকে আদায় করা হচ্ছে কয়েকগুন বাড়তি ভাড়া। আবার অতিরিক্ত ভাড়া দিতে রাজি থাকা সত্বেও মিলছে না কোন পরিবহন, ফলে ত্রিশঙ্কু অবস্থা নগরবাসির!

এ অবস্থায় স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অফিস-আদালতের চাকুরে, বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ জানবাহনের অভাবে দিশাহারা হয়ে হেটেই গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করছেন আর পরস্পরের নিকট প্রশ্ন করছে্ন এ ভাবে চলবে কতদিন?

তাদের আরও অভিযোগ, এ রকম একটি অবস্থার কথা তো সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের জানা ছিলো, অথচ তারা বিকল্প কোন ব্যবস্থা তো গ্রহণই করে নি উল্টো বেপরওয়া ও নিয়ন্ত্রণহীন রিক্সা-ভ্যান চালকদের হাতে নগরবাসিকে তুলে দিয়েছে আর্থিক ভাবে শায়েস্তা করার জন্য, কিন্তু নগরবাসি জানে না তাদের অপরাধ কি ?

facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmailby feather
ট্যাগসমূহঃ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Current ye@r *