সামাজিক দায়বদ্ধতা ও প্রশাসনের কঠোর জবাবদিহিতাই শিশুদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিৎ করতে সক্ষম

মানুষের পারস্পরিক সম্পর্কের দায়বদ্ধতাই সমাজ সৃষ্টি করেছে, আর এই সামাজিক দায়বদ্ধতাই তার সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিৎ করেছে। কিন্তু বর্তমানে সামাজিক সম্পর্কের বিছিন্নতা ও দায়হীনতা সৃষ্টি করেছে সামাজিক নিরাপত্তাহিনতা, যার প্রথম ও প্রধান শিকার সমাজের শিশুরা।

নগর কমিউনিটি ভিত্তিক শিশু সুরক্ষা কৌশল প্রণয়নে সিটি কর্পোরেশনের প্রতিনিধিবৃন্দ ও স্থানীয় জনগণের ভূমিকা বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন খুলনা সিটি মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনি। তিনি বলেন, সারাদেশ থেকে শিশু ও নারী নির্যাতন নির্মূল করতে হবে, আর এ জন্য প্রয়োজন সামাজিক বিছিন্নতার বিপরীতে দৃঢ় সামাজিক ঐক্য ও প্রশাসনের কঠোর দায়িত্ববোধ।

বে-সরকারী সংস্থা ইনসিডিন বাংলাদেশ’র উদ্যোগে আজ নগরীর সিএসএস আভা সেন্টারে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে শিশুদের সংখ্যা পাঁচ কোটি ৬০ লাখ, আর দেশে বিরাজমান সকল প্রকার অনিয়ম, নির্যাতনের প্রথম শিকার এই শিশুরা। সামাজিক সুরক্ষার অভাবে শিশুরা যৌন সহিংসতা, শোষণ ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে পরিবার, সমাজ ও রাস্তায়।

বক্তারা ২০১৩ সালে সারাদেশে সংঘটিত শিশু নির্যাতনের একটি চিত্র তুলে ধরেন যাতে দেখা যায় এ সময় ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১৫০ জন শিশু, খুন হয়েছে ১৮০ জন, শিক্ষাঙ্গনে নির্যাতনের শিকার ১৭০ জন, অপহরণ ৪২ জন, নিখোঁজ ২৫ জন, দুর্ঘটনার শিকার ১৪৯ জন, রাজনৈতিক সহিংসতায় খুন হয়েছে ৬ জন এবং পঙ্গু হয়েছে ১৬ জন শিশু।

সভায় উপস্থিত কাউন্সিলরগণ সহ অন্যান্য বক্তারা বলেন, এ অবস্থা থেকে উত্তরণে কমিউনিটি ভিত্তিক শিশু সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়া শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিৎ করা কঠিন হয়ে পড়বে।

এ অবস্থায় নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ড কাউন্সিলর কে প্রধান করে একটি কমিটি এবং ওয়ার্ডের জনসংখ্যার ভিত্তিতে এলাকার কর্মঠ ও উদ্যোগি মহিলা-পুরুষদের নিয়ে কয়েকটি আঞ্চলিক কমিটি গঠন করা যেতে পারে। যে কমিটিগুলি সম্মিলিত ভাবে দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতার সাথে শিশুদের সুরক্ষায় কাজ করবে এবং শিশু নির্যাতনের সকল ঘটনাবলীর সংবাদ সংগ্রহ করবে ও তার সমাধানে প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এ সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হলে শিশু নির্যাতন বন্ধ এবং শিশুদের সামাজিক নিরাপত্তা অনেকটাই নিশ্চিৎ করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন বক্তারা।

সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেসিসি ২৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন বনি, ২৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলী আকবর টিপু, ২১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সামসুদ্দিন মিয়া স্বপন, ২৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কে এম হুমায়ূন কবির, মহিলা কাউন্সিলর মাহামুদা বেগম, রোকেয়া ফারুক, নাদিরা হোসাইন তুলি, রহিমা আক্তার হেনা, সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মাহাবুবা রহমান, এড. শামিমা সুলতানা শিলু প্রমূখ।

facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmailby feather
ট্যাগসমূহঃ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Current ye@r *