কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গ্রামেই স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্য পক্রিয়াজাতকরণের ব্যবস্থা থাকতে হবে

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নরায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেন, কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গ্রামেই স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্য পক্রিয়াজাতকরণের ব্যবস্থা থাকতে হবে। এতে সেখানে ক্ষুদ্রশিল্প গড়ে তোলা ও সমন্বিত বাজার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পণ্যের উপযুক্ত মূল্য নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

প্রতিমন্ত্রী আজ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনব্যাপী ‘সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০১৬-২০) দলিলের খসড়ার ওপর অংশগ্রহণমূলক আঞ্চলিক পরামর্শ সভা’য় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনায় পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ এ সভার আয়োজন করে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার মূল প্রতিপাদ্য ‘ প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিতকরণ, প্রত্যেক নাগরিকের ক্ষমতায়ন।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, জোয়ার ভাটার এ অঞ্চলে খাল-নদীগুলি অপদখলের শিকার হওয়ায় পানির উচ্চতা বাড়ার সাথে সাথে নদীর তলদেশ ভরাট হতে থাকায় বাঁধগুলো উপচে লোকালয় প্রবাহিত হবার সম্ভাবনা বাড়ছে। একই সাথে বাঁধগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় এ অঞ্চলকে বাঁচাতে নদী-খালগুলির অপদখল উচ্ছেদ ও নদীগুলো নিয়মিত ড্রেজিং করা জরুরী, এবং সুন্দরবনকে বাঁচাতে অবৈধ অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। সুন্দরবন থেকে নিয়মিত গোলপাতা, মধু, মোম আহরণসহ মাছ ধরা নিয়ন্ত্রণেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে কৃষি জমি সংরক্ষণে আলাদা নীতিমালা থাকতে হবে। তিনি আরও বলেন, খুলনায় মেয়েদের জন্য ক্যাডেট কলেজ স্থাপন ও মেরিন একাডেমি স্থাপন এখন সময়ের দাবী। এখানে চিকিৎসার সুযোগ সম্প্রসারিত করতে বিশেষায়িত হাসপাতালে সেবার মান বৃদ্ধিসহ প্রয়োজনীয় মেশিন ও বিশেষজ্ঞের সাথে সাথে শয্যা সংখ্যা বাড়ানোর ওপরও তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য মুহাম্মদ মিজানুর রহমান। মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য প্রফেসর ড. শামসুল আলম। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যর মধ্যে বক্তৃতা করেন পরিকল্পনা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ওএন সিদ্দিকা খানম এবং সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নকীব বিন মাহবুব।
মুক্ত আলোচনায় বক্তারা বলেন, সুন্দরবনকে আলাদাভাবে অগ্রাধিকার মূলক প্রকল্প হিসেবে পরিকল্পনায় আনা দরকার। পানি ব্যবস্থাপনায় নদীতে পললায়ন হল মূল সমস্যা, আর এ সমস্যার মূল নদী-খালগুলির অপদখল উচ্ছেদ ও নিয়মিত ড্রেজিং’র মাধ্যমে নদী ভরাট রোধ করতে পারলে সমস্যা সমাধান অনেকটা সহজ হবে। দূর্নীতি হল দারিদ্র্যের মূল কারণ তাই এটাকে সর্বাগ্রে দূর করতে হবে।

উল্লেখ্য, সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় দারিদ্র হ্রাসকরণকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। এতে মানবসম্পদ উন্নয়নে শিক্ষাকে সকলের জন্য উন্মুক্ত করার লক্ষ্য নেয়া হয়েছে। দেশী-বিদেশী বিনিয়োগে গতিশীলতা আনার পাশাপাশি কাগিরী ও প্রযুক্তিগত দিক থেকে দক্ষ শ্রমশক্তি গড়ে তোলাও এ পরিকল্পনার লক্ষ্য। এ ছাড়া প্রতিবছর ৭.৪% অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য বাস্তবায়নে অন্যতম নিয়ামক হিসেবে সুশাসন প্রতিষ্ঠার কৌশল সমূহ চিহ্নিতকরণ, ভূমিব্যবস্থাপনাসহ পশ্চাদপদ অঞ্চলের জন্য তহবিল গঠনও এ পরিকল্পনার উল্লেখযোগ্য বিষয়।

facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmailby feather
ট্যাগসমূহঃ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Current ye@r *