খুলনা বিভাগীয় চিকিৎসক সমাবেশ এবং স্বাচিপ মনোনীত পরিষদ পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত

খুলনা মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গনে গতকাল অনুষ্ঠিত হয় খুলনা বিভাগীয় চিকিৎসক সমাবেশ এবং বাংলাদেশ মেডিকেল এ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)-খুলনা’র নির্বাচন উপলক্ষ্যে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) মনোনীত পরিষদ পরিচিতি সভা।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। প্রধান অতিথি বলেন, ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত একটি ‘লিনিয়র এক্সিলেটর মেশিন’ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়েছে, যা স্থাপন করা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরী করা হয়েছে, তিনি বলেন এ মেশিন অবশ্যই খুলনা মেডিকেল কলেজেই স্থাপন করা হবে যে জন্য সেনা বাহিনীর নির্দিষ্ট ইউনিটকে এ দায়িত্ব দেওয়া হবে। এবং খুলনা আবু নাসের বিশেষায়ীত হাসপাতারকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে অতিদ্রুত কার্ডিয়াক বাইপাস বিভাগ, ইউরেনাল ট্রান্সপ্লান্টেশন ইউনিট স্থাপন করা হবে ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নবনির্মিত আইসিইউ ইউনিটটি উদ্বোধন করা হবে।

মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার দেশে ১৩ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করেছে এবং শুধু গত এক বছরে ছয় হাজার চিকিৎসককে চাকুরিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যার ফলে দেশের শহর সহ প্রতিটি গ্রামাঞ্চলে সাধারণ মানুষ আজ চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে। তিনি অতিদ্রুত রুগী ও চিকিৎসক সুরক্ষা আইন প্রণয়নের কথাও বলেন যার খসড়া ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে বলে তিনি জানান।

বর্তমান রাজনেতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, বিগত নির্বাচনের আগে বেগম জিয়াকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় সহ পাঁচটি মন্ত্রনালয় প্রদানের প্রস্তাব দিয়ে সংলাপের আহ্বান জানানো হয় কিন্তু তিনি সকল প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে জামায়াতকে নিয়ে বোমা মেরে ও পেট্রোল বোমার আগুন দিয়ে দেশের নিরপরাধ মানুষ হত্যা শুরু করেন এবং নির্বাচন বর্জন করেন। এখন তিনি আবার পেট্রোর বোমায় মানুষ হত্যা করে নিজের ভুলের জ্বালা মিটাচ্ছেন। তিনি বেগম খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ” ৭১’র ঘাতকদের সাথে নিয়ে আপনি এখন নিজেও জঙ্গি হয়েছেন, আমরা সকল জঙ্গিকে দমন করেছি কিন্তু একটি জঙ্গিকে দমন করতে পারিনি সে হ’ল বেগম খালেদা জিয়া, এই জঙ্গিকেও দমন করা হবে।” তিনি বলেন কোনো বোমাবাজ ও খুনীদের সাথে সংলাপ হবে না, ৭১’র ঘাতকদের খালেদা জিয়া বাঁচাতে পারবে না, ওদের বিচার হবেই, কেউ ঠেকাতে পারবে না।

এ সময় আগামী ১২ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য বিএমএ-খুলনা’র নির্বাচনে স্বাচিপ মনোনিত ২৪ সদস্যের ডাঃ শেখ বাহারুল আলম- ডাঃ মোঃ মেহেদী নেওয়াজ পরিষদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় চিকিৎসা ব্যবস্থায় যুগান্তকারী উন্নতি হয়েছে যার সুফল দেশের সাধারণ মানুষ এবং চিকিৎসকগণও বর্তমানে ভোগ করছেন, যার কথা নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত সেন বলেছেন এ ক্ষেত্রে ভারতের পিছিয়ে থাকার উদাহরন দিয়ে। বক্তারা চিকিৎসা ব্যবস্থায় আরও উন্নতির জন্য সরকারের হাত শক্তিশালী করতে বিএমএ’র নির্বাচনে স্বাচিপ মনোনিত পরিষদকে ভোট দিতে চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানান। সভায় অন্যানের মধ্যে বক্তৃতা করেন, ডাঃ কামরুল হাসান, ডাঃ আব্দুল মতিন, ডাঃ আব্দুল কাদের, ডাঃ মার্টিন হিরক চৌধুরী, ডাঃ মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া, স্বাস্থ্য মহাপরিচালক প্রফেসর দ্বীন মোহাম্মদ, ডাঃ সরফুদ্দিন আহম্মদ, ডাঃ বদিউজ্জামান ডাব্লিউ, খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য মোস্তফা রশিদী সুজা, খুলনা জেলা পরিষদের প্রশাসক মোঃ হারুনুর রশিদ, ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী আফম রুহুল হক প্রমূখ। সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বাচিপ-খুলনা সভাপতি ডাঃ শেখ বাহারুল আলম।

উল্লেখ্য, স্বাস্থ্য মন্ত্রী আজ খুলনা মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে নির্মিত দক্ষিণ বাংলার সর্ববৃহৎ শহীদ মিনার পরিদর্শন করেন, এবং নির্মিতব্য ছয়টি স্থাপনার ফলক উন্মোচন করেন, যেগুলি হ’ল – বীর শ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন ছাত্রাবাস, আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় ছাত্রাবাস, বেগম সুফিয়া কামাল ছাত্রীনিবাস, ইলা মিত্র ইন্টার্নি হোস্টেল, শহীদ ডাঃ মোঃ মোর্তুজা ইন্টার্নি হোস্টেল এবং শিল্পী এস এম সুলতান অডিটরিয়াম।

facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmailby feather
ট্যাগসমূহঃ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Current ye@r *