মুক্তিযুদ্ধকালীন সর্বপ্রথম রাজাকার ট্রেনিং ক্যাম্পে গণহত্যা স্মৃতিফলক স্থাপনে বাধা

বাংলাদেশের সর্বপ্রথম রাজাকার ট্রেনিং ক্যাম্প বর্তমান খুলনা আনসার ও ভিডিপি পরিচালকের দপ্তরের সামনে গণহত্যা স্মৃতিফলক স্থাপনের কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। খুলনা শহরের খানজাহান আলী সড়কের পার্শ্বে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে ভুতের বাড়ি বলে পরিচিত ওই বাড়িতে সর্বপ্রথম রাজাকার ট্রেনিং ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে মে মাসে খুলনা আনসার ক্যাম্পে (ভুতের বাড়ি) বাংলাদেশে সর্বপ্রথম রাজাকার ট্রেনিং ক্যাম্প স্থাপন করেন জামায়াতের নেতা রাজাকার পিতা মাওলানা এ কে এম ইউসুফ।

১৯৭১: গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্টের পক্ষ থেকে সারাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে ঘটে যাওয়া নারকীয় হত্যাযজ্ঞের স্থান চিহ্নিতকরণ ও ফলক স্থাপনের অংশ হিসেবে এই স্থানে স্মৃতিফলক স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয় এবং স্মৃতিফলক স্থাপনের জন্য গত ২০ অক্টোবর আনসার ভিডিপি পরিচালকের নিকট থেকে মৌখিক অনুমতি নেয়া হয়।

আগামী ২৯ অক্টোবর ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন’র এটি উন্মোচন করার কথা রয়েছে। ২৫ অক্টোবর রোববার সকালে এই স্মৃতিফলক স্থাপনের কাজ শুরু করা হয়। কাজ তদারককারী অধ্যক্ষ ড. আবুল কালাম আজাদ জানান, নগরীর খানজাহান আলী সড়কের পরিচালক আনসার ভিডিপি রেঞ্জ ও জেলা কমাড্যান্ট খুলনা দপ্তরের সামনে স্মৃতিফলকটি স্থাপনের জন্য ইট, বালি ও সিমেন্ট আনা হয়। সেখানের পাঁচিল ঘেষে মাটি খুড়তে গেলে কর্তৃপক্ষ কাজ বন্ধ করে দেন। পরিচালকের সাথে দেখা করা হলে দুপুরের পরে কাজ করার অনুমতি দেয়া হয়। কিন্তু বিকেল ৪টার দিকে পরিচালক আবার এসে কাজ বন্ধ করে দেন। তিনি জানান, উর্ব্ধতন কর্তৃপক্ষ এখানে কোন স্মৃতিফলক স্থাপন করার বিষয়ে অপারগতা প্রকাশ করেন। আপনারা লিখিত আবেদন করুন।

১৯৭১: গণহত্যা -নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক ডা. শেখ বাহারুল আলম বলেন, গত ২০ অক্টোবর পরিচালকের সাথে আর্কাইভের পক্ষ থেকে দেখা করা হয়। তিনি নিজে এসে জায়গা নির্ধারণ করে দেন। অথচ রোববার কাজ করতে কেন দেয়া হল না এটি বোধগম্য নয়। পরিচালক আকবার আলী জানিয়েছেন, জেলা অ্যাডজুটেন্ট কাজ করতে নিষেধ করেছেন। তাই আপনারা জেলা আনসার অ্যাডজুডেন্ট বরাবর লিখিত আবেদন করুন। তিনি ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করে বলেন, বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধকালিন সময়ের নেতৃত্বদানকারী দলটিই এখন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায়। তাছাড়া সরকার প্রধান ১৯৭১: গণহত্যা -নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্টের এই উদ্যোগের সাথে সরাসরি যুক্ত। কিভাবে জেলা অ্যাডজুটেন্ট এই কাজ বন্ধ করার ধৃষ্টতা দেখাল সেটি ভেবে অবাক হচ্ছি।

খুলনা আনসার ভিডিপি পরিচালক আকবার আলী এ প্রসঙ্গে বলেন, আনসারের গোয়েন্দা রির্পোটের ভিত্তিতে কাজটি উর্ব্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বন্ধ রাখা হয়েছে। সকালে কাজ বন্ধ করে দেয়া ও দুপুরের পর পুনরায় কাজ শুরু এবং পরবর্তীতে আবারও কাজ বন্ধ করে দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, জেলা অ্যাডজুটেন্টর আপত্তি থাকায় তার বরাবর লিখিত আবেদন করতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, নগরীর খানজাহান আলী সড়কের পার্শ্বে ভুতের বাড়ি খ্যাত পরিচালক আনসার ভিডিপি রেঞ্জ ও জেলা কমান্ডান্ট খুলনা দপ্তরের সীমানা প্রাচীরের বাইরে সিটি কর্পোরেশনের জায়গায় স্মৃতিফলকটি স্থাপন করা হচ্ছিল।

facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmailby feather
ট্যাগসমূহঃ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Current ye@r *