অরক্ষিত হয়ে পড়ছে খুবি’র চারুকলা ইনষ্টিটিউটে সংরক্ষিত শিল্পী শশী ভূষণ পাল’র সংগ্রহশালা

শিল্পী শশী ভূষণ পাল'র আঁকা মিনিয়েচার

শিল্পী শশী ভূষণ পাল’র আঁকা মিনিয়েচার

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনষ্টিটিউটে সংরক্ষিত কিংবদন্তি শিল্পী শশী ভূষণ পাল’র সংগ্রহশালা থেকে মূল্যবান ঐতিহাসিক দলিলাদী ও চিত্রশিল্প খোয়া যাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আজকের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনষ্টিটিউট মূলত শিল্পী শশী ভূষণ পাল প্রতিষ্ঠিত মহেশ্বরপাশা আর্ট স্কুল ( ১৯০৪ সাল)’র বিবর্তিত রূপ।  শিল্পী শশী ভূষণ পাল তাঁর বহুবর্ণীল জীবদ্দশায় মহেশ্বরপাশা আর্ট স্কুল’র প্রিন্সিপাল থাকা অবস্থায় নিজের আঁকা ছবি, সমকালীন শিল্পীদের আঁকা ছবি ও ভাস্কর্য দিয়ে গড়ে তোলেন এক দুর্লভ সংগ্রহশালা।

শিল্পী শশী ভূষণ পাল’র সংগ্রহশালা ঃ সূত্রমতে, শিল্পী শশী ভূষণ পাল তাঁর নিজস্ব আঁকা ছবি ও সমকালীন শিল্পীদের আঁকা বিপুল সংখ্যক (প্রকৃত সংখ্যা জানা যায় না) ছবি দিয়ে তাঁর সংগ্রহশালা গড়ে তোলেন, যার মধ্যে শিল্পীর নিজের আঁকা ৫৫টি বা তারও বেশী মিনিয়েচারও ছিলো। সমসাময়িকদের মধ্যে ছিলো সুধাংশু কুমার পাল, সুরেন্দ্রনাথ পাল’র ছবি। পরবর্তীতে এর সাথে যোগ হয় শিল্পী নলিনী বিশ্বাস, শিল্পী আলাউদ্দিন আহমেদ’র ছবি। এ ছাড়া তাঁর সংগ্রহশালায় ছিলো কোটি কোটি টাকা মূল্যের কষ্টি পাথরের তৈরী ৮/৯টি ভাস্কর্য। আরও পরে বিভিন্ন সময়ে এ সংগ্রহশালায় যোগ হয় শিল্পী কামরুল হাসান, এস এম সুলতান, মোঃ কিবরিয়া, মনিরুল ইসলাম, রফিকুন্নবি, হামিদুজ্জামান সহ আরও অনেক বরেণ্য শিল্পীর ছবি ও ভাস্কর্য। আর মূল্যবান দলিলাদীর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখ যোগ্য হ’ল  শিল্পী শশী ভূষণ পাল প্রতিষ্ঠিত মহেশ্বরপাশা আর্ট স্কুল সম্পর্কে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন’র লিখিত ও স্বাক্ষরিত একটি মন্তব্য পত্র।

সূত্রমতে, উল্লিখিত সংগ্রহশালা থেকে ঐতিহাসিক দলিল শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন’র লিখিত ও স্বাক্ষরিত মন্তব্য পত্রটি ইতিমধ্যেই উধাও হয়ে গেছে। একই ভাবে খোঁজ মিলছে না শিল্পী মোঃ কিবরিয়া কৃত একটি ছাপচিত্র!

এ বিষয়ে জানতে চাইলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনষ্টিটিউট’র বর্তমান পরিচালক ড. প্রফেসর আমিরুল মমিনিন জানান, তিনি যখন পরিচালকের দায়িত্ব গ্রহন করেন ( জানুয়ারী ২০১৪) তখন উল্লিখিত সংগ্রহশালার কোন রেজিষ্ট্রার ছিলোনা। সে সময় তিনি শিল্পী শশী ভূষণ পাল’র ৫৩টি মিনিয়েচার চিত্র লিখিত ভাবে বুঝে নেন যা এখনও সংরক্ষিত আছে। এ ছাড়া সংগ্রহশালার আরও কিছু দুর্লভ ছবি ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় ছিলো যা এখনও আছে। তিনি আরও বলেন, ঐতিহাসিক দলিল শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন’র লিখিত ও স্বাক্ষরিত মন্তব্য পত্রটি তিনি কখনও দেখেন নি। যদি তা হারিয়ে থাকে তবে তা তার দায়িত্ব গ্রহনের পূর্বেই হারিয়েছে।

উল্লেখ্য, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ ফায়েক উজ্জামান’র উদ্যোগে খুব শিঘ্রই শিল্পী শশী ভূষণ পাল’র ছবি নিয়ে একটি প্রদর্শনী হতে যাচ্ছে। ইতি মধ্যেই চারুকলা ইনষ্টিটিউট’র বর্তমান পরিচালক ড. প্রফেসর আমিরুল মমিনিন সহস্তে শিল্পী শশী ভূষণ পাল’র ৫৩টি মিনিয়েচার ছবি সহ অন্যান্য ছবির ফ্রেমিং’র কাজ সম্পন্ন করেছেন।

facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmailby feather
ট্যাগসমূহঃ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Current ye@r *