ঈদের পোশাকের ফ্যাশান আর আভিজাত্যে এগিয়ে বুটিকস্। ক্রেতাদের অভিমত, বুটিকস্’র পোশাকে থাকে শিল্পীর কারুকার্যময় নান্দনিক ভাবনা যা রং-তুলির স্পর্শে বা সূচিকর্মে ফুটে উঠে একটি পোশাককে একটি শিল্পকর্মে পরিণতকরে। ফলে পোশাকটি হয়ে ওঠে অভিজাত ও ক্লাসিক।
ক্রেতাদের রুচি, ফ্যাশান আর চাহিদার কারণেই খুলনা মহানগরীতে গড়ে উঠছে মানসম্মত বুটিকস্ হাউসগুলি। একই ছাদের নীচে নানা ফ্যাশানের বাহারি সব পোশাকের সাথে ম্যাচিং করে বেছে নেওয়া যায় বিভিন্ন ধরনের মনভোলানো ডিজাইনের সব অলংকারও, যা বুটিকস্ হাউসগুলির নিজস্ব বৈশিষ্টও। সে কারণেও অভিজাত ফ্যাশান প্রিয় ক্রেতাদের নিকট বুটিকস্ হাউসগুলি হয়ে উঠছে প্রিয়।
এবারের ঈদে বাহারি ডিজাইনের সব নজরকাড়া ফ্যাশান’র পোশাকের পসরা নিয়ে হাজির নগরীর শের-এ-বাংলা রোডের আমতলায় অবস্থিত বুটিকস্ হাউস ‘নোনাভূমি’। নোনাভূমি’র সত্বাধিকারী শিপার হাসানুজ্জামান নিজে একজন পেশাদার শিল্পী, চারুকলার মাস্টার্স। তার হাতের যাদুতে হ্যান্ডপেইন্ট শাড়িগুলি পরিণত হয়েছে যেন পোশাক নয় এক একটি ল্যান্ডস্কেপ, যা এবারের ঈদেরও বিশেষ আকর্ষণ।
নোনাভূমিতে মিলবে হ্যান্ডপেইন্ট সিল্ক, মসলিন শাড়ি যার মূল্য ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা, কটন শাড়ি পাঁচশ’ টাকা থেকে চার হাজার টাকা এবং হাফসিল্ক চার হাজার থেকে ছয় হাজার টাকা। বাহারি সব সামার কালেকশন থ্যী-পিস পাওয়া যাবে ৮শ’ টাকা থেকে তিন হাজার টাকায়। টপস্ তিনশ’ থেকে ১৬শ’ টাকা। টি-সার্ট দুইশ’ থেকে পাঁচশ’ টাকা, সার্ট তিনশ’ থেকে আটশ’ টাকা, জিন্স-গ্যাবর্ডিন তিনশ’ থেকে ১৫শ’ টাকা। ডিভাইডার-পালাজো ২৫০ টাকা থেকে ছয়শ’ টাকা।
ছেলেদের পোশাকের মধ্যে আছে পাঞ্জাবী পাঁচশ’ থেকে সাতশ’ টাকা, সার্ট দুইশ’ থেকে চারশ’ টাকা, টি-সার্ট এক হাজার থেকে ১৮শ’ টাকা।
শিশুদের সার্ট দুইশ’ থেকে চারশ’ টাকা, টি-সার্ট একশ’ থেকে চারশ’ টাকা, প্যান্ট ফুল দুইশ’ থেকে ছয়শ’ টাকা , হাফ একশ’ থেকে তিনশ” টাকা, ফ্রগ দুইশ’ থেকে পাঁচশ’ টাকা এবং স্কার্ট একশ’ থেকে তিনশ’ টাকা। শিপার জানান, ফ্যাশানকে অবশ্যই ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতার সাথে সামঞ্জস্য রাখতে হবে। তিনি এ দুটির সমন্বয় ঘটাতে সক্ষম হয়েছেন, ফলে তার ক্রেতারাও খুশি আর তার বেচাকেনাও ভালই হচ্ছে যা প্রতিদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
নগরীর কেডিএ এভিন্যিউ ময়লাপোতা এলাকায় (পারিজাত ভবন) অবস্থিত ঐতিহ্যবাহি বুটিকস্ সপ ‘তিরান’স ক্রিয়েশনস’। এখানেও বিক্রি হচ্ছে বাহারি ফ্যাশানের রুচিসম্মত সব পোশাক। বাটিক-ব্লক-হ্যান্ডপেইন্ট’র সুতি, কোটা, মসলিন, সিল্ক শাড়ি বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা থেকে ৮ হাজার টাকার মধ্যে। থ্রী-পিস ৭৫০ টাকা থেকে চার হাজার টাকা। পাঞ্জাবী পাঁচশ’ টাকা থেকে ২২৫০ টাকা। টপস্ তিনশ’ টাকা থেকে এক হাজার টাকা। স্কার্ট পাঁচশ’ টাকা থেকে ছয়শ’ টাকা। সার্ট ৬৫০ টাকা, টি-সার্ট ১৫০ টাকা থেকে তিনশ’ টাকা। আর আছে চমৎকার সব মাটি ও মেটালের অলংকার যার দাম ১৫০ টাকা থেকে ২২শ’ টাকা পর্যন্ত। তিরান’স এর সত্বাধিকারী রুনালিসা শাহরিয়ার জানান, ঈদে তাদের বিক্রি ভালই হচ্ছে কারণ বর্তমান ক্রেতাদের মধ্যে অনেকেরই বক্তব্য রুচিশীল ফ্যাশানের ও আভিজাত্যের প্রতিক হয়ে উঠছে বুটিকস্’র পোশাক।
সময়ের হিসেবে খুলনা মহানগরীর সবচেয়ে পুরাতন বুটিকস্ হাউস শান্তিধাম মোড়ের ‘পাড়’। পাড় শুধু নিজেই একটি বুটিকস্ হাউস নয় বরং তার পরিচালকদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় মহানগরী সহ জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে বহু সংখ্যক বুটিকস্ হাউস গড়ে উঠেছে। পাড়ের বিশেষ বৈশিষ্ট কমদামে ফ্যাশান সরবরাহ। এখানে আছে হ্যান্ডষ্টিচ, হ্যান্ডপেইন্ট, স্ক্রিনপ্রিন্ট, ব্লক’র বিভিন্ন ধরনের শাড়ি যার মূল্য ছয়শ’ টাকা থেকে ৩৮৫০ টাকা। থ্রী-পিস ১২শ’ টাকা থেকে ২২শ’ টাকা। টপস্ ছয়শ’ টাকা থেকে ১২শ’ টাকা। ওড়না ২৭০ টাকা থেকে চারশ’ টাকা। কামিজ নয়শ’ টাকা থেকে ১৪শ’ টাকা। বেবী ফতুয়া দুইশ’ টাকাথেকে চারশ’ টাকা। বিশেষ আকর্ষণ অর্ণামেন্টস। মেটার ও স্টোন’র অলংকার ৬০ টাকা থেকে ১২শ’ টাকা পর্যন্ত। এখানকার কর্মিরাও জানান যে তাদের বিক্রি মোটামুটি ভালো। ঈদের ফ্যাশান হিসেবে বিপুল সংখ্যক ক্রেতারই এখন নজর বুটিকস্’র পোশাকের দিকে।
by
সর্বশেষ মন্তব্যসমূহ