সাম্রাজ্যবাদি মিডিয়ার মিথ্যাচার বন্ধ করতে বাংলাদেশ সরকারকে জোর প্রতিবাদ জানাতে হবে এবং ওদের মুখোষ খুলে দিতে হবে এক্ষুনি।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কুখ্যাত ‘আলবদর বাহিনীর’ প্রধান জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীকে (৭৩) ফাঁসির রশিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।মঙ্গলবার রাত ১২টা ১০ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত ফাঁসির মঞ্চে এ দণ্ড কার্যকর করা হয়।
আল বদর ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সহায়তা দানকারী আধা-সামরিক বাহিনী। যার সৃষ্টি হয়েছিল পাকিস্তান রাষ্ট্রকে অখন্ড রাখার উদ্দেশ্যে জনমত গঠন করার জন্য। পূর্বাঞ্চলীয় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল নিয়াজীর পৃষ্ঠপোষকতায় এই বাহিনী গঠিত হয়েছিল। এদের মূলকাজ ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের পাকিস্তানী বাহিনীর হাতে তুলে দেয়া আর নারী ধর্ষণ এবং পাকবাহিনী সহ অন্যদের ধর্ষণে সহায়তা করা, সেই সাথে বাঙালী নারীদের ধরে নিয়ে পাকবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া।
মে
মাসে রাজাকার বাহিনী গঠনের আগেই এপ্রিল মাসে গঠিত হয় আল বদর বাহিনী। রাজাকার বাহিনী সরাসরি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে, আর আল বদর বাহিনীর মূল কাজ ছিল সন্ত্রাস ও রাজনৈতিক গণহত্যার মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করা। সাধারণভাবে ধারণা করা হয় যে পাকিস্তান বিরোধী বুদ্ধজীবীদের হত্যা করাই ছিল এই বাহিনীর মূল লক্ষ্য। ১৯৭১ সালে এই আলবদর বাহিনী দেশের সূর্যসন্তান বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাদের নৃশংস ভাবে হত্যা করে, আর এই হত্যাযজ্ঞের নেতা ছিলো মতিউর রমান নিজামী।
“দৈনিক সংগ্রাম” পত্রিকায় ১৪ নভেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্রকাশিত সংবাদে ইসলামি ছাত্রসংঘের নেতা মতিউর রহমান নিজামী বলেন,
“আমাদের পরম সৌভাগ্যই বলতে হবে, এ দেশের ইসলাম প্রিয় তরুন ছাত্র সমাজ বদর যুদ্ধের স্মৃতিকে সামনে রেখে আল-বদর বাহিনী গঠন করেছে।”
ইরানি বংশোদ্ভূত গবেষক সাইয়েদ ওয়ালি রেজা নাসের তাঁর ‘দ্য ভ্যানগার্ড অব দি ইসলামিক রিভলিউশন : দ্য জামায়াতে ইসলামী অব পাকিস্তান’ শীর্ষক বইয়ে লিখেছেন, ‘একাত্তরে সরকারের অনুপ্রেরণায় ইসলামী ছাত্রসংঘ (আইজেটি) হয়ে ওঠে জামায়াতে ইসলামীর মূল শক্তি। আর্মির সহায়তায় এরা আলবদর ও আলশামস নামে দুটি প্যারামিলিটারি ইউনিট গঠন করে বাঙালি গেরিলাদের সঙ্গে লড়াই করার জন্য। ইসলামী ছাত্রসংঘের তখনকার নাজিম-ই আলা (প্রধান) মতিউর রহমান নিজামী আলবদর ও আলশামস বাহিনী গঠন করেন।
এই কুখ্যাত খুনি, নারী ধর্ষণকারি আজীবন পাকিস্তানের দালালকে অনেকে মওলানা বলছে বা লিখছে, যারা এটা করছে তারা ইসলাম ধর্মকে অবমাননা আপদস্থ করছে, তারা দেখাতে চাইছে যে ইসলাম একটি খুনি-ধর্ষণকারীদের ধর্ম! মনেরাখতে হবে যে এয়া কখনই ইসলামের অনুশারী ছিলো না, বরং ইসলাম ধর্মকে এরা বিকৃত করে উপস্থাপন করেছে, ইসলামকে এরা বাজারে বিক্রি করেছে এবং নিজেদের কুকর্ম ঢাকতে এই ভন্ড শয়তানগুলি ইসলাম ধর্মের সাথেও ভন্ডামী করে আলেম মওলানার লেবাস নিয়েছে। এভাবে এরা শুধু এ দেশের মানুষের সাথেই নয় ইসলাম তথা আল্লাহ’র সাথেও প্রতারণা করেছে আমৃত্যু।
আর এখন কিছু বিদেশী মিডিয়া এদের (এই ভন্ড শয়তানদের) ইসলামী নেতা বলে প্রচার করছে অথচ এ সকল মিডিয়াই ৭১ সালে অন্য কথা বলেছে লিখেছে যার প্রমাণ আছে ভুরি ভুরি, ইন্টারনেট খুললেই বা ওই সময়ের পত্রিকা খুললেই চোখে পড়বে। আসলে এই সাম্রাজ্যবাদী বিদেশী মিডিয়া নিজামিদের ইসলামী নেতা বলে বিশ্বের চোখে ইসলামকেই অপদস্থ করতে চাইছে, ওরা দেখাতে চাইছে ইসলামের নেতা মানেই ধর্ষণকারী, খুনি, লুটেরা দেশদ্রোহী! অথচ এরাই প্রমাণ করেছে যে আলবদ-রাজাকাররা কখনই ধর্মের অনুশারী ছিলো না ছিলো ধর্ম ব্যবসায়ী, ধর্মের নামে এদেশের অজ্ঞ অশিক্ষিত মানুষের সাথে এরা ভন্ডামী করেছে আর হাজার হাজার কোটি কালো টাকার পাহাড় গড়ে রেখেছে, ৭১ সালে এই আলবদর-রাজাকাররা ছিলো সব নিম্নশ্রেণীর গরিব মানুষ আর আজ এদের নেতা-হাতারা টাকার পাহাড় গড়ে তুলেছে যা তাদের ব্যক্তিগত সম্পদ। আর এখানেই ওরা নিজেরাই প্রমাণ করেছে ওরা কেমন ধর্মীয় নেতা। আসলে দেশী-বিদেশী সাম্রাজ্যবাদীরা এদেশে আবারও রক্তপাতের সুযোগ খুঁজছে যদি পানি ঘোলা করে দেশটাকে কব্জা করা যায়। সব পুরনো শকুন জোট বাধছে নতুন ভাগাড়ের খোঁজে!
সাম্রাজ্যবাদি মিডিয়ার মিথ্যাচার বন্ধ করতে বাংলাদেশ সরকারকে জোর প্রতিবাদ জানাতে হবে এবং ওদের মুখোষ খুলে দিতে হবে এক্ষুনি।
by
সর্বশেষ মন্তব্যসমূহ