টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষা করতে হবে

উন্নয়নের সাথে পরিবেশের সংঘাত নয় বরং পরিবেশের ক্ষতিকে সর্ব্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে, উন্নয়ন হতে হবে সর্বনিম্ন দূষণের নিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রাণবৈচিত্র্যের বিষয়টি বরাবরই উপেক্ষা করা হয়েছে। তাই এ অঞ্চলের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো কয়েক দশক পর অভিশাপ হয়ে দেখা দিচ্ছে। সুতরাং প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষা করা ছাড়া কোনো অঞ্চলেই টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। আর প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষা করার জন্য বিষয়টি খন্ডিত ভাবে ভাবার কোনো সুযোগ নেই, কেন না এ অঞ্চলের মাটি, পানি, বায়ুপ্রবাহ, লবণাক্ততা সবকিছুই প্রাণবৈচিত্র্যের সঙ্গে সম্পর্কিত।

আজ আন্তর্জাতিক প্রাণবৈচিত্র্য দিবস উপলক্ষ্যে স্থানীয় একটি হোটেলে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। এ্যাওসেড, বাংলাদেশ নাগরিকঅধিকার আন্দোলন, উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্মজোট (ক্লিন), পরিবর্তন-খুলনা ও টীম থিয়েটারের যৌথ উদ্যোগে আলোচনা সভাটিঅনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন ক্লিন-এরপ্রধান নির্বাহী হাসান মেহেদী।

দক্ষিণাঞ্চলের সাম্প্রতিক উন্নয়নের জন্য বর্তমান সরকারকে ধন্যবাদ দিয়ে বক্তারা বলেন, মহাসড়ক ও বিদ্যুত সরবরাহে উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বিপুল পরিমাণ অপরিকল্পিত বেসরকারি বিনিয়োগ হচ্ছে যা ভবিষ্যতে আবারও অভিশাপ হয়ে দেখা দিতে পারে। কোন ধরনের শিল্প-কারখানা বা অবকাঠামো কী ক্ষতি করবে সে সম্পর্কে গবেষণা ও পরিকল্পনা না করে বিনিয়োগ করলে তা লাভের চেয়ে ক্ষতির মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে।

সভায় বক্তারা বলেন, প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষা করে পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন সম্ভব হলেও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে উন্নয়ন ও পরিবেশকে মুখোমুখি করা হয়েছে। ফলে ষাটের দশকের কাক্সিক্ষত বেড়িবাঁধ আশির দশকে অভিশাপ হয়ে দেখা দেয়। উপকূলীয় অঞ্চলের মাটিতে একই সঙ্গে ধান ও মাছচাষ সম্ভব হলেও, ব্যাপক ভাবে বিষের ব্যবহারের ফলে উপকূলীয় মৎস্য-সম্পদ পুরোপুরি শেষ হয়ে গেছে। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠন করার সাথে সাথে উপকূলীয় অঞ্চলে শস্য সংরক্ষণাগার গড়ে তোলা দরকার। বক্তারা দ্রুততর সময়ে খুলনায় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করার দাবি জানান।

বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট কুদরত-ই-খুদা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সুন্দরবন একাডেমির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আনোয়ারুল কাদির, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. দিলীপ কুমার দত্ত এবং তথ্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ম. জাভেদ ইকবাল। আলোচনা সভা শেষে বাংলাদেশের সুন্দরবন ও দক্ষিণাঞ্চলের পরিবেশ বৈচিত্র্য বিষয়ক মনোজ্ঞ নাটক উপস্থাপন করে টীম থিয়েটার’র নাট্যদল।

এ্যাওসেড-এরনির্বাহী পরিচালক শামীম আরফিন’র সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন নাজমুল আযম ডেভিড,নাসিম রহমান কিরন প্রমূখ।

facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmailby feather
ট্যাগসমূহঃ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Current ye@r *