মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হলে জঙ্গীবাদ এদেশের মাটিতে ঠাঁই পাবে না: উপাচার্য

ঢাকার হলি আর্টজান রেস্টুরেন্ট, কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ্সহ সাম্প্রতিক দেশে সংগঠিত জঙ্গী হামলা ও হত্যাকা-ের প্রতিবাদে এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১-৮ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) আহবানে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে জঙ্গীবিরোধী কর্মসূচি পালনের অংশ হিসেবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদী চত্বরে সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত র‌্যালি, মানববন্ধন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান। তিনি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মরণকালের এই বৃহত্তম র‌্যালি, মানববন্ধন ও সমাবেশে সকল শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীর অংশ গ্রহণই প্রমাণ করে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে তথা বাংলাদেশে  জঙ্গীবাদের স্থান নেই। তিনি বলেন, মুক্তি যুদ্ধের চেতনা নিয়ে, অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধ হলে জঙ্গীবাদ এদেশের মাটিতে ঠাঁই পাবে না। তিনি বলেন সবার আগে মানুষ ও মানবিক মূল্যবোধকে গুরুত্ব দিতে হবে। আমাদেরকে মানুষ হয়ে উঠতে হবে। তাহলে জঙ্গীবাদ মননে আসবে না। তিনি আরও বলেন রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার কতো বিপদজ্জনক তা আমরা টের পেয়েছি। রাজনীতি হওয়া উচিত দেশের উন্নয়নে, মানুষের কল্যাণে। তিনি বলেন পৃথিবীর কোনো ধর্মই মানুষকে হত্যার কথা বলে না। পবিত্র ধর্ম ইসলামেও সে কথা নেই। অথচ এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী, মৌলবাদী ও ধর্মের অপব্যাখ্যাকারী ফতোয়া দিয়ে, ভুল তথ্য দিয়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষিত যুবকদের ধর্মের নামে মানুষ হত্যায় নামিয়েছে। তিনি বলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই মানববন্ধনে স্বতস্ফুর্তভাবে যে বক্তব্য দিয়েছে তাতে প্রমাণিত হয় আজকের এ প্রজন্মের তারা কতো সচেতন, দেশ প্রেমিক। তিনি আরও বলেন আমাদের শিক্ষার্থীদের এই বোধ ও উপলব্ধিতে আমি বিশ্বাস করি এই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বা এই দেশে জঙ্গীবাদ কখনোই শিকড় গাঢ়তে পাড়বে না। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের প্রতি কেবলমাত্র সিলেবাসের সীমাবদ্ধ শিক্ষাদান না করে তাদেরকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, দেশ প্রেম, মানবিক ও সামাজিক মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার আহবান জানান।

মানববন্ধন চলাকালে আরও বক্তব্য রাখেন ট্রেজারার খান আতিয়ার রহমান, জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ নাজমুল আহসান, চারুকলা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. আহমেদ আহসানুজ্জামান, রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব) খান অলিয়ার রহমান, ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর ড. অনির্বাণ মোস্তফা, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক মো. আবুল ফজল, শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাংলা ভাষা ও সহিত্য ডিসিপ্লিনের রহিমা আক্তার বিথী, গণিত ডিসিপ্লিনের আবু দাউদ, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ ডিসিপ্লিনের মাকসুদা নাসরিন, অর্থনীতি ডিসিপ্লিনের আবুজর শিকারী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের মো. মতিউর রহমান, সমাজ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের অনিকা ইসলাম, দীপক কুমার দাস, ওয়ালিউল্লাহ, প্রিন্ট মেকিং ডিসিপ্লিনের শাহরীন শবনম, শাপলা সিংহ, প্রসেনজিত প্রমুখ। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলের শিক্ষক, শিশু শিক্ষার্থীরাও অংশগ্রহণ করেন। উল্লেখ্য, স্মরণকালের এই বৃহত্তম মানববন্ধন হাদী চত্বর থেকে শুরু করে দক্ষিণে প্রশাসনিকভবন, পূর্বে এক নম্বর একাডেমিক ভবন এবং পশ্চিমে প্রায় জীববিজ্ঞান ভবন পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করে।

facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmailby feather
ট্যাগসমূহঃ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Current ye@r *