রূপসায় বিদ্যালয়ের সভাপতির বিরুদ্ধে শিরিশ গাছ কাটার অভিযোগ

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি বা কোন প্রকার টেন্ডার ছাড়াই রূপসা উপজেলার কাজদিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতির বিরুদ্ধে বিদ্যালয় বাউন্ডারীর শিরিশ গাছ কাটার অভিযোগ পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার গাছ কাটা বন্ধ করলেও তার বিরুদ্ধে এখনো কোন আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি বলে জানা গেছে। এদিকে গাছ কাটার বিষয়টি জায়েজ করতে দৌঁড়-ঝাপ শুরু করেছেন ওই সভাপতি। গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ছাদেকুর রহমান।

সরেজমিনে জানা গেছে, হিজরী নববর্ষ উপলক্ষে বন্ধ থাকায় কাজদিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক মোর্শেদুল আলম বাবু নিজের খেয়াল-খুশিমত সোমবার লেবার লাগিয়ে বিদ্যালয় বাউন্ডারীর বড় একটি শিরিশ গাছ কাটা শুরু করেন। গাছটির বড় বড় ডাল কাটার পর খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার ঘটনাস্থলে পৌছে গাছ কাটা বন্ধ করেন। এসময় তার সাথে থাকা পুলিশ গাছ কাটা লেবারদের ধাওয়া করলে তারা পালিয়ে যায়।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. বাকির হোসেন বলেন, বিদ্যালয় বন্ধ থাকা অবস্থায় গাছ কাটা শুরু হয়। এ ব্যাপারে আমি বা বিদ্যালয়ের অ্যন্যান্য শিক্ষকরা কেউ জানে না। খবর পেয়ে আমি বিদ্যালয়ে ছুটে এসে গাছ কাটা বন্ধ করার চেষ্টা চালায়। তিনি বলেন গাছটি অপসারণের জন্য আমরা গত ১৭ জুলাই উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত আবেদন করি। পরে উনার কথামত গত ২০ সেপ্টেম্বর রেজুলেশন করা হয়। তবে গাছ কাটার এখনো কোন অনুমতি বা টেন্ডার হয়নি। বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সদস্য ও জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক কাজল বলেন, সরকারি বিধি অমান্য করে কাউকে কিছু না বলে সভাপতি গাছ কেটেছে। এটা চরম অপরাধ। এর বিচার হওয়া দরকার। তিনি বলেন এর আগেও সে আরো গাছ কেটে বিক্রি করেছে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ মনিরুল ইসলাম বলেন, গাছটি অপসারণের জন্য ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে। তবে প্রক্রিয়া সম্পন্নের আগে গাছ কাটা উচিৎ হয়নি। উপজেলা সামাজিক বনায়ন নার্সারি কেন্দ্রের (এসএফপিসি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আজাদ হোসেন বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানের জমির ওপর থাকা গাছ রেজুলেশন করে কাটা যায়না। নিয়ম মোতাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরারর আবেদন করতে হবে। এরপর গাছের মূল্য নির্ধারণ করে তার টেন্ডার করতে হবে। তবে এ বিদ্যালয়ের গাছ কাটার বা এটি অপসারণের ব্যাপারে ইতোপূর্বে আমাকে অফিসিয়ালি জানানো হয়নি। তিনি বলেন, গাছের বেশ কিছু অংশ কাটার পর মঙ্গলবার আমার কাছে একটি আবেদন দিয়েছেন বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক। বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মোর্শেদুল আলম বাবু বলেন, কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে গাছের মোটা ডাল-পালা কাটিয়েছি। তবে তার এই বক্তব্যের সত্যতা পাওয়া যায়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ছাদেকুর রহমান বলেন, আমি ছুটিতে থাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। তবে আমি কর্মস্থলে এসে বিষয়টি জানার পর মঙ্গলবার সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। তিনি বলেন, গাছ কাটার সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmailby feather
ট্যাগসমূহঃ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Current ye@r *