মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন ও তাদের স্বপ্ন বা¯তবায়নের অঙ্গীকার নিয়ে খুলনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০১৭ পালন করা হয়।
সূর্যোদয়ের সাথে সাথে গল্লামারী শহীদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণের মধ্যদিয়ে স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচি শুরু করা হয়। প্রত্যুষে কালেক্টরেট প্রাঙ্গণে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্যদিয়ে দিবসের শুভ সূচনা করা হয়। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে সকাল হতে রাত পর্যন্ত শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ও সড়ক দ্বীপসমূহ জাতীয় পতাকা ও রং বে-রঙের পতাকা দিয়ে সজ্জিত করা হয়।
সকাল আটটায় খুলনা জিলা স্কুল মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মোঃ আবদুস সামাদ। পরে সেখানে বিভিন্ন বাহিনী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের সমাবেশ, কুচকাওয়াজ, ডিসপ্লে ও শরীরচর্চা প্রদর্শন করা হয়। সকাল ১১টা থেকে নগরীর সিনেমা হলসমূহে ও দৌলতপুর শহীদ মিনারসহ বিভিন্ন উন্মুক্ত স্থানে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামান্য চলচ্চিত্র ও দুর্নীতি বিরোধী তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেয়া হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন খুলনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, বিভাগীয় কমিশনার মোঃ আবদুস সামাদ, পুলিশ কমিশনার নিবাস চন্দ্র মাঝি, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশিদ, অতিরিক্ত ডিআইজি মোঃ হাবিবুর রহমান এবং পুলিশ সুপার মোঃ নিজামুল হক মোল্যা। এতে সভাপতিত্ব করেন খুলনা জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান। অনুষ্ঠানে অন্যান্যর মধ্যে বক্তৃতা করেন মুজিব বাহিনীর ডেপুটি কমান্ডার শেখ ইউনুছ আলী, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জেলা ইউনিট কমান্ডার সরদার মাহবুবার রহমান, সাবেক জেলা কমান্ডার নূর ইসলাম বন্দ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন মিন্টু, স ম রেজওয়ান আলী এবং বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ খুলনা মহানগর ইউনিট কমান্ডার অধ্যাপক আলমগীর কবির। এসময় সংবর্ধিত মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
হাসপাতাল, জেলখানা, এতিমখানা ও ভবঘুরে প্রতিষ্ঠান ও শিশুকেন্দ্র সমূহে দিবসটি উপলক্ষ্যে বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হয়। জাতির শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করে বাদযোহর কালেক্টর মসজিদ সহ নগরীর মসজিদে মসজিদে বিশেষ মোনাজাত এবং মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।
বেলা ২টা থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত স্থানীয় নৌ-বাহিনীর জাহাজ খুলনাস্থ বিআইডব্লিউটিএ রকেটঘাটে জনসাধারণের দর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়। খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট ভবন সমূহে আলোকসজ্জা করা হয়।
বেলা সাড়ে তিনটায় পাইওনিয়ার মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে মহিলাদের ক্রীড়ানুষ্ঠান। বিকেল চারটায় খুলনা জিলা স্কুল মাঠে পরপর দুটি ম্যাচ যথা-জেলা প্রশাসন একাদশ বনাম কেসিসি একাদশ এবং খুলনা প্রেসক্লাব বনাম খুলনা চেম্বারের মধ্যে প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শহীদ হাদিস পার্কে অনুষ্ঠিত হয় “মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তির সার্বজনীন ব্যবহার” শীর্ষক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ।
দিবসটি উপলক্ষ্যে খুলনা বেতার বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার এবং স্থানীয় সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে।
স্বধীনতা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পৃথক পৃথক কর্মসূচির আয়োজন করে। উপজেলাগুলোতেও অনুরূপ কর্মসূচি পালন করা হয়।
by
সর্বশেষ মন্তব্যসমূহ