খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে ১৭ জুন রোটারি ক্লাব অব গ্রান্ড খুলনা এবং রোটারি ক্লাব অব কলকাতা সান সিটির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত থ্যালাসেমিয়া এওয়ারনেস এন্ড প্রিভেনশন শীর্র্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে প্রধান অতিথির খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বলেন, থ্যালাসেমিয়া রোগ একটি পরিবারের বিপর্যয় ডেকে নিয়ে আসে। অথচ এই রোগ প্রতিরোধযোগ্য। এই রোগ সম্পর্কে সমাজে সচেতনতা বাড়াতে পারলে থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধ সম্ভব। তিনি বলেন এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আয়োজিত এই সেমিনার উন্মুক্ত থাকলে তাতে আরও বহু শ্রেণির মানুষ উপকৃত হতো। তিনি বলেন ভারতের রোটারি ক্লাব অব কলকাতা সান সিটি এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের রোটারি ক্লাবের সাথে যে যৌথ উদ্যোগ নিয়েছে তা প্রশংসনীয়। তিনি বলেন বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক অনেক আগে থেকেই বন্ধুত্বপূর্ণ ও গভীর, বিশেষ করে একাত্তর সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়কার সহযোগিতার কথা আমরা সব সময়ই স্মরণ করি। তিনি বলেন সেই বন্ধুত্ব, সহমর্মিতা, সৌহার্দ্য ও সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে আমরা সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে চাই, সকল সমস্যার সমাধান করতে চাই।
রোটারি ক্লাব অব গ্রান্ড খুলনার সভাপতি রোটা. মুক্তি দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রোটা. পিপি ডাঃ সৈয়দ আবু সাঈদ, গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য রাখেন খুলনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি রোটা. এস এম হাবিব এবং পশ্চিমবঙ্গের রোটারি ক্লাব অব কলকাতা সান সিটির সভাপতি শম্পা ঘোষ। অনুষ্ঠানে মূল নিবন্ধ উপস্থাপন করেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আরআই ডিস্ট্রিক্ট ৩২৯১ এর থ্যালাসেমিয়া কমিটির চেয়ারম্যান রোটা. ডাঃ রামেন্দু হোমচৌধুরী। মা ও শিশু বিষয়ে নিবন্ধ উপস্থাপন করেন পশ্চিমবঙ্গের রোটা. ডাঃ বন্দনা হোমচৌধুরী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ও সমন্বয়ক ছিলেন খুবির ইংরোজি ডিসিপ্লিনের শিক্ষক রোটা. মোঃ সামিউল হক। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি উপাচার্যকে পশ্চিমবঙ্গের রোটারি ক্লাব অব কলকাতা সান সিটির পক্ষ থেকে উত্তরীয় এবং ক্রেস্ট উপহার দেওয়া হয়। উপাচার্য ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আরআই ডিস্ট্রিক্ট ৩২৯১ এর থ্যালাসেমিয়া কমিটির চেয়ারম্যানকে ক্রেস্ট উপহার দেন।
মূল নিবন্ধে পশ্চিমবঙ্গের আরআই ডিস্ট্রিক্ট ৩২৯১ এর থ্যালাসেমিয়া কমিটির চেয়ারম্যান রোটা. ডাঃ রামেন্দু হোমচৌধুরী থ্যালাসেমিয়ার উপর সবিস্তর আলোকপাত করে বলেন থ্যালাসেমিয়া কেবল বাংলাদেশ ও ভারতবর্ষের রোগ নয়। এটা সারা দুনিয়ায় মানুষের মধ্যে জিনগতভাবেই লুকিয়ে রয়েছে। পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশ এই রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়েছে। স্বামী স্ত্রী যদি উভয়ই এ রোগের বাহক না হন তবে এ রোগে শিশু আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। তাই বিয়ের আগেই অবশ্যই রক্ত পরীক্ষা করানো উচিত। কঠোরভাবে এই একটি ব্যবস্থা অনুসরণ করা গেলে থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধ সম্ভব। তিনি ভবিষ্যতে পোলিওর মতো থ্যালাসেমিয়া রোগ প্রতিরোধে রোটারিয়ানদের ভূমিকা পালন এবং এছাড়া সমাজে নেতৃত্বস্থানীয় সকলস্তরের ব্যক্তিবর্গের ভূমিকা পালনে আহবান জানান।
by
সর্বশেষ মন্তব্যসমূহ