মানবতাবিরোধী অপরাধে বাগেরহাটের ১৪ জনের বিরুদ্ধে ৭ অভিযোগ

বাগেরহাটের ১৪ রাজাকারের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। আসামিদের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা-গণহত্যা, নারী ধর্ষণ, অবৈধ আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগসহ সাতটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ২ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ ২২ জনকে হত্যা, ৪৫/৫০টি বাড়ির মালামাল লুণ্ঠনের পর আগুনে পুড়িয়ে বাড়িগুলি সম্পূর্ণ ধ্বংস করা, ২ জনকে অমানুষিক নির্যাতনে গুরুতর জখম করা এবং ৪ জন নারীকে দীর্ঘদিন রাজাকার ক্যাম্পে আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করা।

কুখ্যাত রাজাকার হিসেবে মে থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বাগেরহাটের কচুয়া ও মোরেলগঞ্জ উপজেলায় তারা এসব মানবতাবিরোধী অপরাধ করেন বলে অভিযোগে বলা হয়েছে। একই মামলার ওই ১৪ আসামির মধ্যে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন ৪ জন। তারা হলেন- খান আকরাম হোসেন (৬০), শেখ মোহম্মদ উকিল উদ্দিন (৬২), ইদ্রিস আলী মোল্লা (৬৪) ও মো. মকবুল মোল্লা (৭৯)। পলাতক দশজন হচ্ছেন- খাঁন আশরাফ আলী (৬৫), সূলতান আলী খাঁন (৬৮), মকছেদ আলী দিদার (৮৩), শেখ ইদ্রিস আলী (৬১), শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল (৬৪), রুস্তম আলী মোল্লা (৭০), মো. মনিরুজ্জামান হাওলাদার (৬৯), মো. হাশেম আলী শেখ (৭৯), মো. আজাহার আলী শিকদার (৬৪) ও মো. আবদুল আলী মোল্লা (৬৫)। আসামিরা মোরেলগঞ্জ ও কচুয়া উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা হলেও একজন খুলনায় থাকতেন। একাত্তরে তারা প্রথমে মুসলিম লীগ ও পরে জামায়াতের সমর্থক হিসেবে রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। গত রোববার রাজধানীর ধানম-ির তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ৪৫তম এ তদন্ত প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আবদুল হান্নান খান, জ্যেষ্ঠ সমন্বয়ক সানাউল হক এবং এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. হেলাল উদ্দিন সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। গত রোববারই এ তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। এর ভিত্তিতে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) তৈরি করে ট্রাইব্যুনালে দাখিল করবেন প্রসিকিউশন। এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. হেলাল উদ্দিন ২০১৫ সালের ০৪ জুন থেকে গত রোববার পর্যন্ত তদন্তকাজ সম্পন্ন করে সাতটি ভলিউমে মোট ১ হাজার ৩০৯ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করেন। মোট ৬১ জন সাক্ষী দেবেন ১৪ আসামির বিরুদ্ধে। তাদের মধ্যে ৫৭ জন ঘটনার সাক্ষী, তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং ৩ জন জব্দ তালিকার সাক্ষী। গত বছরের ২৬ জুলাই মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ওই ১৪ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। ওইদিনই সন্ধ্যায় বাগেরহাট ও খুলনার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmailby feather
ট্যাগসমূহঃ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Current ye@r *