মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য উদ্বোধন ও একাত্তরের গণহত্যার স্মারক হস্তান্তর অনুষ্ঠান

আজ ০৬ শুক্রবার বিকালে খুলনায় অবস্থিত দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র গণহত্যা জাদুঘর ১৯৭১ : গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর  প্রাঙ্গণে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য ও গণহত্যার বিভিন্ন স্মারক ও স্মৃতিচিহ্ন হস্তান্তর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

অমিয় তরফদারের বিখ্যাত ছবি ‘রিক্সায় পড়ে থাকা মৃত মানুষের লাশ’ এর ছায়া অবলম্বনে বিখ্যাত শিল্পী হামিদুজ্জামান খান ১৯৭১ : গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর এর জন্য ‘গণহত্যা ১৯৭১’ শিরোনামে একটি ভাস্কর্য নির্মাণ করেছেন। যেটি ইতোমধ্যে জাদুঘর প্রাঙ্গণে স্থাপিত হয়েছে। আজকের এই হস্তান্তর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ভাস্কর্যটির ক্ষুদ্র প্রতিকৃতি ১৯৭১ : গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্টের সভাপতি ড. মুনতাসীর মামুন এর হাতে তুলে দেন শিল্পী হামিদুজ্জামান খান।

৭ মার্চ ১৯৭১, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের উদাত্ত আহবানে সাড়া দিয়ে সাড়ে সাত কোটি বাঙালী তাদের ঘরে যা কিছু ছিল তাই নিয়েই ঝাপিয়ে পড়েছিলেন শত্রুর মোকাবেলা করতে। সেগুলোর মধ্যে ছিল বেয়নেট, নাংটলা, ঝুপি, রামদা, কালি, বল্লম, ঢাল, সরকির মত সাধারণ দেশীয় অস্ত্র। এছাড়াও পাকিস্তানী সেনা ও রাজাকার বাহিনীরা মুক্তিযোদ্ধাদের নির্যাতনের জন্য বিভিন্ন ধরণের অস্ত্র ব্যবহার করত। যার মধ্যে বেত ছিল অন্যতম। দেশের আনাচে কানাচে বিভিন্ন স্থানে এসকল স্মৃতিস্মারক আজও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার অধিবাসী মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ফজলুল হক মাতুব্বর, মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হান্নান মুন্সী, মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই, বীরঙ্গনা নুরজাহান বেগম, বীরঙ্গনা মিনি বেগম, আবদুল আজিজ মাতুব্বর, কলম শেখ, মোসলেম প্রমুখ তাঁদের সংগ্রহে থাকা এরকম কিছু স্মারক ১৯৭১ : গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর এ সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের জন্য প্রদান করেছেন।

মুক্তিযুদ্ধের এসব নিদর্শন ড. মুনতাসীর মামুন এর কাছে হস্তান্তর করেন নগরকান্দা উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ফজলুল হক মাতুব্বর। উল্লেখ্য, দাতাগণ প্রত্যেকেই মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইবুন্যাল এর স্বাক্ষী ছিলেন। এছাড়া, শহীদ গোলাম হায়দারের স্মৃতিচিহ্ন জাদুঘরকে দান করেন তাঁর কন্যা নাসরীন হায়দার।

হস্তান্তর অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ১৯৭১ : গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্টের ট্রাস্টি চৌধুরী শহীদ কাদের। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাদুঘর ট্রাস্টের সম্পাদক ডা. শেখ বাহারুল আলম। সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন খুলনা বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান এবং শিল্পী হামিদুজ্জামান খান। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন ড. মুনতাসীর মামুন।

facebooktwittergoogle_plusredditpinterestlinkedinmailby feather
ট্যাগসমূহঃ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*
*

Current ye@r *