খুলনা বিভাগের ‘নদ-নদীর বর্তমান অবস্থা, বিদ্যমান সমস্যা এবং সমস্যা সমাধানের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনার আজ সকালে খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার।
প্রধান অতিথির বক্তুতায় চেয়ারম্যান বলেন, মনুষ্য সৃষ্ট সমস্যার কারণে আজকে নদীসমূহ ভরাট হয়ে যাচ্ছে। দেশে নদী কমিশন গঠন করা হয়েছে। খাল ও নদীর নাব্যতা বজায় রাখা আমাদের অস্তিত্বের জন্য জরুরী। তিনি বলেন, যে কোন বিষয়ে সমস্যা সমাধানের জন্য সমস্যাকে চিহ্নিত করা দরকার। খাল, জলাধার, নদী ভরাট বন্ধ করতে সরকার আপোষহীন। নদী ব্যবস্থাপনায় জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর, পাউবো, এলজিইডিসহ বিভিন্ন বিভাগের সমন্বয় থাকতে হবে। এছাড়া সচেতনতা ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে স্থানীয় স্টেক হোল্ডারদেরও ভূমিকা রাখতে হবে।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য মোঃ আলাউদ্দিন। এতে সভাপতিত্ব করেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যশোর পাউবোর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী অখিল কুমার বিশ্বাস এবং অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) সুবাস চন্দ্র সাহা। জাতীয় নদী কমিশনের সহযোগিতায় খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেমিনারে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মচারি ও বেসরকারি দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করেন।
সভায় জানানো হয় ভবদহ এলাকায় মনিরামপুর, কেশবপুর, অভয়নগর উপজেলাধীন বিস্তীর্ণ এলাকার জলাবদ্ধতার সমস্যার স্থায়ী সমাধান কল্পে ১৯৯৮ সাল থেকে বিভিন্ন বিলে পর্যায়ক্রমে টিআরএম চালু করার মাধ্যমে নদীর নাব্যতা বৃদ্ধিকরণ এবং পলি দ্বারা নিচু বিল উচুকরণ প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে ভায়না বিল, কেদারিয়া বিল, খুকশিয়ার বিলে টিআরএম চালুর মাধ্যমে প্রকল্প এলাকায় জলাবদ্ধতা সমস্যা দূর করা হয়েছে। উল্লেখ্য, Tidal River Management অর্থাৎ টিআরএম পদ্ধতি হচ্ছে নীচু বিলকে জলাধার নির্মাণ পূর্বক পলিবাহিত জোয়ারের পানি প্রবেশ করানোর পর পলি বিলে জমা হয়। এরপর ভাটির সময় পরিস্কার পানি নদীতে নেমে যায়, এতে একদিকে বিলের জলাবদ্ধতা নিরসন হয় অন্যদিকে নদীর গভীরতা বৃদ্ধি পেয়ে নদী নাব্য হয়। এটা পরিবেশ বান্ধব। কপোতাক্ষ নদের তালা উপজেলায় পাখিমারা বিলে টিআরএম চালুর মাধ্যমে কপোতাক্ষ অববাহিকায় ৭৫হাজার হেক্টর জমি দীর্ঘ স্থায়ী জলাবদ্ধতা দূর করা হয়েছে। এছাড়া আঠারোবাকি নদী পুনখনন পূর্বক উহাকে স্থায়ী করার জন্য দুইটি বিলে টিআরএম চালু করার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
by
সর্বশেষ মন্তব্যসমূহ